শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

কূটনৈতিক ঝড়ের পরও উজ্জীবিত জেলেনস্কি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫

আঘাতপ্রাপ্ত কিন্তু অনুপ্রাণিত’—স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরের একটি ছোট্ট কক্ষে কয়েকজন সাংবাদিকের কাছে এভাবেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সফরসঙ্গীদের একজন তার মনোভাব ব্যাখ্যা করেন।

সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ‘সম্মানজনক অভ্যর্থনা’ দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। যুক্তরাজ্যে আসার পর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে উষ্ণ আলিঙ্গন এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত করতালিতে জেলেনস্কিকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে চায়ের আড্ডায় অংশ নেন তিনি।

তবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই ৯০ মিনিট, যখন তিনি ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার আগে সরাসরি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তখন তিনি শুধু ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বলেন, যাতে তার বক্তব্য নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কাছ থেকে কঠিন কথা শোনার পর যুক্তরাজ্যে পৌঁছলে উল্টো সংবর্ধনা পেয়েছেন জেলেনস্কি। তবে প্রকাশ্যে তিনি মনোবল হারানোর কোনো লক্ষণ দেখাননি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা যদি মনোবল হারাই, তবে সবাইকে হতাশ করব’।

তিনি স্টারমার ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইউরোপভিত্তিক নিরাপত্তা গ্যারান্টির পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। তাদের এই কৌশলের লক্ষ্য হলো শান্তি আলোচনার রূপরেখা তৈরি করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কম নির্ভরশীল হওয়া।

জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পের একটি দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত—অর্থাৎ ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ দিতে রাজি।

কিন্তু এর বাইরে তিনি কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি। তিন বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ক্লান্ত হলেও তিনি এখনই রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার আলোচনা করতে নারাজ।

জেলেনস্কি বলেন, ‘এখনই সীমান্ত নির্ধারণ নিয়ে কথা বলার সময় নয়’।

ওভাল অফিসে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে তিনি কোনো দুঃখপ্রকাশ বা ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি হননি—যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠমহল বারবার দাবি করছে।

এমনকি ন্যাটোর মহাসচিবও জেলেনস্কিকে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরের ছোট্ট সেই ঘরে জেলেনস্কির কণ্ঠে আপসের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তিনি বরং স্মরণ করিয়ে দেন যে তিনি বহু ঘণ্টা ভ্রমণ করে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তার সম্মানের প্রকাশ।

তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে অপমান করিনি।’

ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা এড়িয়ে গেছেন। তবে তিনি আশাবাদী যে এই টানাপোড়েন কেটে যাবে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে খবর আসে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে।

জেলেনস্কি কি জানেন? তিনি কি একমত?

মুচকি হেসে উত্তর দেন জেলেনস্কি, ‘আমি সব জানি’। এরপর কক্ষে হাসির রোল পড়ে যায়।

এরপর তিনি বিমানে ওঠার আগে সবার সঙ্গে করমর্দন করেন এবং কিছু ছবি তোলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS