শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও যুব সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়ার মাজারে নাগরিক দলের শ্রদ্ধা এবং বিএনপির র‌্যালি অনুষ্ঠিত ভৈরবে ট্রাকের পিছনে পিকআপের ধাক্কায় চালক ও হেলপার গুরুতর আহত চব্বিশ এবং একাত্তরের অপরাধীরা নির্বাচন চায় না : মোমিন মেহেদী জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)-এর আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত হয়েছে “নাগরিক নিরাপত্তা ও আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব” শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত আজ ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল টিউবস লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আল-আমিন কেমিক্যাল প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে ফাইন ফুডস

 ১১তম জাতীয় কবি সম্মেলন ২০২৫ এর সভাপতি নির্বাচিত হলেন অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কবি, সমাজবিজ্ঞানী ও শিকড়সন্ধানী অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ‘১১তম জাতীয় কবি সম্মেলন ২০২৫’ এ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ১০ টায় রাজধানীর একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত কবি সংসদ বাংলাদেশ স্থায়ী পরিষদের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তিনি নির্বাচিত হন। এ সম্মেলনে নিরপেক্ষ রাজনৈতিক চিন্তা ও তত্ত্বের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে কবি সংসদ বাংলাদেশ পদক ২০২৫ ও কবি আবদুল হাই সিকদারকে আজীবন সম্মাননা প্রদানের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। উৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব নির্বাচিত হন কবি তৌহিদুল ইসলাম কনক।

তামিজী স্যার নামে দেশে বিদেশে খ্যাত অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী সম্পর্কে সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার আন্দোলনের সমকালীন ইতিহাসে অনুজপ্রতীম অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী একজন প্রবাদ পুরুষ’।  ভাষাবিদ গবেষক অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা সবাই ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা নিজেরাই ইতিহাস সৃষ্টি করেন ৷ মু নজরুল ইসলাম তামিজী বাংলাদেশে মানবাধিকার ও মানবতাবাদী আন্দোলনের ইতিহাসে এমনই এক কিংবদন্তি।’ বাংলাদেশ ল’ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান বিচারপতি আলী আসগর খান লিখেছেন, ‘তামিজী স্যার অসাধারণ নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন একজন মানবিক মানুষ।’

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত ‘মুক্তিপণ’ কাব্যগ্রন্থের মধ্য দিয়ে তামিজী স্যার লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি একজন শিকড়সন্ধানী লেখক, মানবাধিকার তাত্ত্বিক, রাষ্ট্রচিন্তক ও গবেষক। প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৬১। কাব্যগ্রন্থ ২টি, উপন্যাস ৩টি, গবেষণা গ্রন্থ ৩ টি, নাটক ৫৩ টি। তামিজী স্যার ছাত্রজীবনে লিখেন, ‘ডাস্টবিনে পড়ে থাকা উচ্ছিস্ট ময়লা, গভীর রাতের নীরবতা, পঙ্গু ফড়িংয়ের মতো থেমে থেমে চলা, চারদিক শব্দের শুন্যতা’ (কাব্যগ্রন্থ: মুক্তিপণ, প্রকাশক- নবযাত্রা, প্রকাশকাল ১৯৮৮)। বর্ণমালা কবিতায় তিনি লিখেন, ‘অনুস্বার নয়, বিসর্গ নয়, বর্ণমালা হই, মানুষ হই, সমুন্নত হই।

তামিজী স্যারের নাটক ‘বিজয়ের পতাকা’ ও ভাষা আন্দোলনের পটভূমি নিয়ে নাটক ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ ১৯৯৪ খৃ. থেকে শুরু করে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতাধিকবার মঞ্চস্থ হয়েছে।
‘না ডেমোক্র্যাসি, নাও হোমোক্রেসি’ তামিজী স্যার এর অসাধারণ সৃষ্টি। এ গ্রন্থটিতে তিনি সমাজবিজ্ঞান এর পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রসমুহে এরিস্টটল এর গণতন্ত্র কেন কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারছে না। প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বায়নের যুগে কল্যাণমুলক রাষ্ট্র গঠনে সরকার ব্যবস্থায় তিনি ‘হোমোক্র্যাসি’ নামে নতুন একটি দর্শন প্রবর্তন করে সমকালীন সমাজবিজ্ঞান ও রাজনীতি বিজ্ঞানে তাঁর আসন পোক্ত করেছেন।

১৯৯৩ খৃ. এ শিক্ষানবীশ হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু। এরপর দৈনিক রূপসী বাংলা, সাপ্তাহিক রঙধনু (বার্তা সম্পাদক), দৈনিক গণকন্ঠ (সহযোগী সম্পাদক), দৈনিক বাংলা (নির্বাহী সম্পাদক), দৈনিক আজাদ বাণী (নির্বাহী সম্পাদক), দৈনিক মুক্তির লড়াই (প্রধান সম্পাদক), দৈনিক আমাদের সময় এ গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে নতুন সাংবাদিক সৃষ্টিতে, হাতে কলমে শিক্ষাদানে ব্যাপক প্রশংসিত তিনি । তার অধঃস্তন অনেক সাংবাদিক এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন ফ্রীল্যান্স জার লেখক সাংবাদিক ঐক্য ফাউন্ডেশন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থায়। দৈনিক মুক্তির লড়াই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। বর্তমানে ‘দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা’-এর উপদেষ্টা সম্পাদক। নতুন সৃষ্টি ও পরিকল্পনায় তাঁর আনন্দ । জীবনের বড় সাফল্য প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় অনেক সাংবাদিক গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন যারা তাঁর হাত ধরে এ পেশায় এসেছেন ।

তিনি কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার মন্দুক গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে (তামিজী মঞ্জিল) জন্মগ্রহণ করেন। পিতা প্রয়াত ডা. নুরুল আমিন তামিজী (১৯৩৯-২০২৩) সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সমবায়ী। মাতা মিসেস নাজমা আমিন তামিজী একজন প্রতিবাদী নারী ও সফল গৃহিনী। তামিজী স্যার মন্দুক প্রাথমিক বিদ্যালয়,কুমিল্লা জিলা স্কুলে প্রাথমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। সোনাইমুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর পয়ালগাছা ডিগ্রি কলেজ, আড্ডা ডিগ্রি কলেজ ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। ইংরেজিতে সম্মানসহ মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজে অধ্যায়নকালীন কুমিল্লা গণদাবী ছাত্র পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে আইন, বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, উন্নয়ন অধ্যায়ন ও সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স কোর্স এ ভর্তি হয়েও পিতার আাদেশে কোর্সটি ছেড়ে দেন।পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তাঁর ঝুলিতে দুইটি ডক্টরেট ডিগ্রী রয়েছে।  তাঁর এমফিল ও পিএইচডির বিষয়: ‘সার্কভুক্ত ৭টি দেশের সংবিধান ও বাংলাদেশ।’

তামিজী স্যার ২০০১ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে সাংবাদিকতা ছেড়ে পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেন। তিনি ২০০৪ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে উন্নীত হন। ২০০৫ সালে আমেরিকা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে  যোগদান করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, কলা অনুষদের ডীন, প্রোভিসি (২০০৮-২০০৯) ও ভারপ্রাপ্ত ভিসি (২০০৯) হিসেবে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ জানুয়ারি ২০১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্ণীতি, সনদ জালিয়াতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আমেরিকা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পদ থেকে পদত্যাগ করে আবার সাংবাদিকতা জীবনে ফিরে যান। জুলাই বিপ্লবের পর আগস্ট  ২০২৪ এ তিনি ভিসি পদমর্যাদায় আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির প্রশাসক নিযুক্ত হন।

তামিজী স্যার বাংলাদেশের মানবাধিকার আন্দোলনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি এর প্রতিষ্ঠাতা (২০০১) ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সোশিওলজিস্ট ফোরাম (বিএসএফ) এর প্রেসিডেন্ট, ,আন্ত: বাংলা মৈত্রী মঞ্চ ও কবিসংসদ বাংলাদেশ স্থায়ী পরিষদপর চেয়ারম্যান হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান ও সোশ্যাল পলিসি এলামনাই এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সোশ্যাল থিংকিং রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে যুক্ত। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভুমিকা রয়েছে। বর্তমানে তিনি ‘আমজনতা বাংলাদেশ’ এর কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS