শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ইতালির রোমে জিয়া সাইবার ফোর্স (ZCF) ইতালি শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে Financial Statements (Q1) of Monno Fabrics Limited ২৮ প্রতিষ্ঠানের নেগেটিভ ইক্যুইটি, আনরিয়েলাইজড লস প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয় করার সময়সীমা বৃদ্ধি প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে বারাকা পাওয়ার ফার কেমিক্যালের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে আরগন ডেনিমস প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে স্টাইলক্রাফ্ট

বছরে ফিড-মুরগির বাচ্চায় ৬ হাজার কোটি টাকা লুটপাট তবুও লসের গল্প শোনাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ডিম-মুরগির দাম বাড়লেই আমরা দেখছি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গণমাধ্যম, সরকার এবং সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, ডিম-মুরগির দামের পেছনের প্রকৃত কারণগুলো কেন আলোচনায় আসে না? ফিড, মুরগির বাচ্চা এবং অন্যান্য উপকরণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি—যা সরাসরি প্রান্তিক খামারিদের সংকটে ফেলছে—তা নিয়ে আলোচনা হয় না কেন? ৮ থেকে ১০ টি কোম্পানির হাতে জিম্বি ফিড মুরগির বাচ্চা সহ পুরো পোল্ট্রিখাত ডিম মুরগির বাজার ও নিয়ন্ত্রণ করেন তারা তাদের হাতে প্রান্তিক খামারীদের লাভের হিসাব নিকাশ। কর্পোরেট গ্রুপগুলো চাচ্ছেন প্রান্তিক খামারীদের হটিয়ে পোল্ট্রি বাজারকে তাদের নিয়ন্ত্রণে একচেটিয়া করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইউক্রেন – রাশিয়ার যুদ্ধের অজুহাতে পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনের ফিড উৎপাদনের পণ্যের বেড়ে গেছে বলে নানা অজুহাত দিয়ে পোল্ট্রি ফিডের দাম গত দুই বছর আগে ৫০-৬০% বেড়ে গেছে। বড় কর্পোরেট কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু এই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা সম্পূর্ণভাবে প্রান্তিক খামারিদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনের যত পণ্য আছে তার ভিতরে অন্যতম ভুট্টার সয়াবিন যা ফিড উৎপাদনের ৬০% ভুট্টা প্রয়োজন হয় ৩০% সয়াবিন প্রয়োজন হয় যার আন্তর্জাতিক বাজারে গত চার বছরের সর্বনিম্ন দাম কিন্তু অজানা কারণে বাংলাদেশের বাজারে পোল্ট্রি ফিডের দাম কমছে না কর্পোরেট কোম্পানিগুলো সব সময় সরকার সহ সকল মহল কে লসের গল্প শুনিয়ে আসতেছেন তাদের ফিডমিল হ্যাচারি গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এগুলো সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত কারণ তারা একটি ফিড মিল একটি হ্যাচারি থেকে এখন একেকজনের ১০-২০ টি ফিডমিল ও হ্যাচারি রয়েছে সরকার এগুলো
খতিয়ে দেখা উচিত তাদের লাভ না হলে কিভাবে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাড়লো এবং আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হল কি করে। প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্পে চলমান অস্থিরতার অন্যতম কারণ হল ফিড এবং মুরগির বাচ্চার অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি। যখন ডিম বা মুরগির দাম বাড়ে, তখন তা ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে, কিন্তু ফিড ও বাচ্চার দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কেন কোনো আলোচনা হয় না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ফিড এবং বাচ্চার দাম বাড়িয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে তুলছে, যার ফলে খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বছরে ফিড ও মুরগির বাচ্চায় প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে, তবে সরকারের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে।
দেশের মোট ডিম ও মুরগি উৎপাদনের ৮০% সরবরাহ করেন প্রান্তিক খামারিরা। কিন্তু বর্তমানে তারা বড় চাপের সম্মুখীন।

২০২২ সাল থেকে পোল্ট্রি ফিডের দাম ৫০-৬০% বেড়েছে, যা খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার ডিমের ন্যায্যমূল্য ১০.৫৮ টাকা নির্ধারণ করলেও, খামারিরা বাজারে ৯-১০ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং খামারিরা ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন।

বর্তমানে ১৫-২০% বড় কর্পোরেট কোম্পানির হাতে পুরো পোল্ট্রি শিল্প নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ফিড মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী শীর্ষ কোম্পানিগুলো মধ্যে ৮ থেকে ১০ টি কোম্পানি। তারা ফিড এবং মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে মুনাফা করেছে, যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা বাজারের চাপ সইতে পারছেন না। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে।
ভোক্তাদের জন্যও ডিম ও মুরগির দাম বাড়ানো উদ্বেগজনক। যদি প্রান্তিক খামারিদের সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা যায় এবং সিন্ডিকেট ভাঙা যায়, তবে বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভোক্তারা সাশ্রয়ী দামে মানসম্পন্ন পণ্য পাবেন। ১. ফিড এবং মুরগির বাচ্চার দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নামাতে হবে। ২. প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারের ঘোষিত দাম বাস্তবায়ন করা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. বড় কর্পোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট ভেঙে বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে হবে। ৪. প্রান্তিক খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ এবং ভর্তুকি সহায়তা প্রদান করতে হবে। ৫. ফিড এবং মুরগির বাচ্চার যৌক্তিক দাম বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. ডিম-মুরগির বাজারে অসাধু সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।
৭.সরকারিভাবে প্রান্তিক খামারিদের ডিম মুরগি ক্রয়েয়ের ব্যবস্থা করতে হবে । প্রান্তিক খামারিদের জন্য জামানত বিহীন ঋণ সুবিধা প্রয়োজন, যা তাদের সহজে নতুন করে খামার চালু করতে সহায়তা করবে। এই ঋণের মাধ্যমে তারা উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পোল্ট্রি শিল্পের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারবেন।
সরকারি নীতি নির্ধারণী মিটিংগুলোতে প্রান্তিক খামারিদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। যেখানে শুধুমাত্র কর্পোরেট কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে, সেখানে প্রান্তিক খামারিরা অংশগ্রহণ না করলে তাদের সমস্যাগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। সরকারের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে সিন্ডিকেটের লাগাম টানতে হবে এবং প্রান্তিক খামারিদের রক্ষা করতে হবে।

বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে মূলত সিন্ডিকেটের কারণে, যা খামারিদের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পোল্ট্রি শিল্পের এই বিশাল সংকটে সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। সরকার যদি বাজারের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তবে বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে এবং প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে। সরকারের উচিত সিন্ডিকেটের একচেটিয়া শক্তিকে ভেঙে বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা, যাতে পোল্ট্রি শিল্পের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা যায়। এই পদক্ষেপগুলো খামারি ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় সাহায্য করবে। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সবসময় সরকার এবং প্রান্তিক খামারিদের পাশে রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য পোল্ট্রি শিল্পে স্থিতিশীলতা আনা এবং প্রান্তিক খামারিদের জন্য সঠিক সহায়তা প্রদান করা। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘিত হলে, সকল ফিড এবং মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারীদের কোম্পানির বিরুদ্ধে সরকারের উদ্বেগে কঠোর ভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। যাতে ডিম মুরগির বাজার সহ পোল্ট্রি শিল্পে স্থিতিশীলতা আসে ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS