শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

অতিরিক্ত মুনাফা করেও ব্রিডার ফার্মগুলোর ৭৫০ কোটি টাকা মিথ্যা লোকসানের দাবির প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছে যে দেশের বৃহৎ ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে গত ২০-১২-২০২৪ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় যে ব্রিডার ফার্মগুলোর ,চলতি বছরে ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের তথ্য জানায় যা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এই নিউজ এর প্রতীবাদ জানাচ্ছি। তারা লোকসানের কথা বললেও তারা কোন বিস্তারিত হিসাব তুলে ধরেনি অন্যদিকে আমরা সব সময় অভিযোগ করে আসতেছি যে মুরগির বাচ্চার সংকট এবং পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামে প্রান্তিক খামারীদের ডিমও মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে অন্যদিকে একটি ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা যা অযৌক্তিকভাবে তাদেরকে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ৫২ টাকা ,এবং একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা সর্বোচ্চ ৫৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করে দিলেও কোম্পানিগুলো সব সময় মুরগির বাচ্চার সংকট তৈরি করে অধিক দামে বিক্রয় করেছেন এবং এখনো একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও কেন তারা লসের গল্প শোনাচ্ছে এগুলোকে সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।

কোম্পানিগুলো মিথ্যা লোকসানের গল্প বলার সুযোগ পাওয়ার কারন তাদের বিরুদ্ধে বার বার সিন্ডিকেটের চিত্র উঠে আসলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কোন বাবস্থা নেয়া হয়নি । সরকারি ভাবে ফিড মিল হ্যাচারি না থাকার কারনে গুটি কয়েক ৮-১০ টি কোম্পানির কাছে দেশের পোল্ট্রি খাত নির্ভর করতে হচ্ছে যার কারনে দিন দিন ডিম মুরগির বাজারে মাঝে মাঝে অস্থিরতা দেখা দেয় । আমরা মনে করি কর্পোরেট কোম্পানি গুলোর কাছে সরকার ও প্রান্তিক খামারি ভোক্তা সবাই জিম্বি হয়ে পড়েছি । সরকার সাভারে একটি ফিড মিল চালু করার কথা থাকলেও আজও পর্যন্ত অজানা কারনে সরকার সেই ফিড মিল চালু করেনি অন্যদিকে সরকারি হ্যাচারীগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ তার মানে যতদিন সরকার নিজস্ব ফিড মিল এবং হ্যাচারীর চালুর ব্যবস্থা না করবে ততদিনে এই সিন্ডিকেট বন্ধ হবে না একদিকে তারা অতিরিক্ত মুনাফা করতেছে অন্যদিকে সরকারকে লসের গল্প শুনিয়ে সরকারের নজর ভিন্ন দিকে গুরিয়ে দিছছে এবং সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা সহ সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেছে । অন্যদিকে প্রান্তিক খামারীরা ডিম মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় যৌক্তিক মূল্য না পেয়ে লস করে ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে খামার বন্ধ করে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে ।

কর্পোরেট কোম্পানির মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী ব্রিডার ফার্ম গুলো, নিজেদের বিপুল মুনাফা লুকিয়ে মিথ্যা লোকসানের দাবি তুলেছে। এর মাধ্যমে তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করে এবং বাজারে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করে প্রান্তিক খামারিদের নিঃস্ব করার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। আগামীতে ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে ।

সুত্র বনিক বার্তা ও প্রকাশিত, কোম্পানিগুলোর সফলতার গল্প ও তার প্রকৃত চিত্র আর্থিক তথ্য অনুযায়ী, ব্রিডার ফার্মগুলোর প্রকৃত লাভের পরিমাণ বিপুল: কাজী ফার্মস: ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩,৯৩৮ কোটি টাকার বিক্রি, ১৭৫ কোটি টাকা কর-পূর্ব মুনাফা এবং ১,৬৮৬ কোটি টাকা সংরক্ষিত মুনাফা। সিপি বাংলাদেশ: ৪,৩৫৩ কোটি টাকার বিক্রি, ১৫৩ কোটি টাকা কর-পূর্ব মুনাফা এবং ৬৭৮ কোটি টাকা সংরক্ষিত মুনাফা। প্যারাগন পোলট্রি: ৭৭০ কোটি টাকার বিক্রি, ৩৮ কোটি টাকা কর-পূর্ব মুনাফা এবং ৩২৭ কোটি টাকা সংরক্ষিত মুনাফা। সুত্র এগ্রি কেয়ার প্রকাশিত, নাহার এগ্রো কমপ্লেক্স যিনি ৩০০ মুরগি দিয়ে খামার শুরু করে আজ তার বাৎসরিক আয় ১০০০-১২০০ কোটি টাকা । তবে এরা ৭৫০ কোটি টাকার লোকসানের দাবিতে সরকারের কাছ থেকে অযৌক্তিক আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে। এই লসের গল্প সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সিন্ডিকেটের কার্যক্রম ও প্রান্তিক খামারিদের দুর্দশা ১. বাজার নিয়ন্ত্রণ: এই ফার্মগুলো কৌশলগতভাবে ডে-ওল্ড চিকস (ডিওসি), পোল্ট্রি ফিড, এবং অন্যান্য পোল্ট্রি পণ্যের মূল্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে।২. উৎপাদন সংকট: মুরগির বাচ্চার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।৩. প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস:
সিন্ডিকেটের অযৌক্তিক মূল্য চাপের কারণে প্রান্তিক খামারিরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারছে না।৪. ভ্যাট ফাঁকি: ব্রিডার ফার্মগুলো সরকারের ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে কিনা এবং মিথ্যা লোকসানের দাবির মাধ্যমে সুবিধা আদায় করছে। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দৃঢ়ভাবে বলছে, এই সিন্ডিকেটের কার্যক্রম দেশের পোল্ট্রি শিল্পকে ধ্বংস করছে।

বিশেষ করে প্রান্তিক খামারিদের কর্মসংস্থান এবং দেশের ভোক্তাদের অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিপিএ এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়াজ তুলে ধরে যেমন,প্রান্তিক খামারিদের সমস্যা ও পোল্ট্রি খাতের সমস্যা ও সংকট গুলো সরকারের কাছে উপস্থাপন করে আসছে । তাই বিপএ এর বিরুদ্ধে কর্পোরেট শক্তি দোষারোপ করে এবং পোল্ট্রি শিল্পের ধ্বংসকারী হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দপ্তর সংস্থা কাছে অপপ্রচার চালাচ্ছে এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক। সরকারের মিটিং গুলোতে কর্পোরেটদের এসোসিয়েশন গুলো যুক্ত থাকলেও বিপি এ কে যুক্ত করলে তাদের আপত্তি থাকতো ।

কারন তাদের অযৌক্তিক দাবী গুলো আদায় করার জন্য বিপিএ কে বিভিন্ন মন্ত্রনালয় দপ্তর সংস্থার থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে যাতে তাদের সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করতে পারে এবং শিল্পকে দখল করে নিয়ে বাজারকে একচেটিয়া করে ফেলতে পারে এই অপসক্তির বিরুদ্ধে সরকার তদন্ত করে তাদের শাস্তির আওতায় নিতে হবে । ১. ব্রিডার ফার্মগুলোর প্রকৃত লাভের হিসাব তদন্ত করুন।২. মুরগির বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রয়ের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করুন।৩. মাঠ পর্যায়ের ডিলার ও প্রান্তিক খামারিদের তথ্য বিশ্লেষণ করুন।৪. ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করুন।৫. সিন্ডিকেটের কার্যক্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন।

বিপিএ-এর অঙ্গীকার বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় ডিম মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখতে। ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় এবং পোল্ট্রি সেক্টরের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা সরকারের সঙ্গে থেকে এই খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS