শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

রোজায় কোরআন তিলাওয়াতের সওয়াব অপরিসীম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২
  • ৪৭ Time View

১৮তম রোজার দোয়া: হে আল্লাহ! এ দিনে আমাকে সাহরির বরকতের উসিলায় সচেতন ও জাগ্রত করে তুলুন। সাহরির নূরের ঔজ্জ্বল্যে আমার অন্তরকে আলোকিত করে দিন। আপনার নূরের উসিলায় আমার প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গে আপনার নূরের প্রভাব বিকশিত করুন। হে সাধকদের অন্তর আলোকিতকারী!

আজ ১৮ রমজান। আজ আমরা আলোচনা করব রমজানে কোরআন তেলওয়াতের গুরুত্ব নিয়ে। মাহে রমজান আল-কোরআন নাজিলের মাস হওয়ায় এ সময় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের সওয়াব অপরিসীম। এ জন্য মানবজাতির হেদায়েতের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ ঐশীগ্রন্থ আল-কোরআন তিলাওয়াত করা, এর মর্ম হৃদয়ঙ্গম করা এবং তদানুসারে আমল করা প্রত্যেক রোজাদার মুসলমানের অবশ্যকর্তব্য। তাই রমজান মাসকে রোজাদারেরা বিশুদ্ধ তিলাওয়াতের মাস হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। ঐচ্ছিক ইবাদতের মধ্যে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত সর্বোৎকৃষ্ট। মাহে রমজানে আল-কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আল-কোরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে তা শিক্ষা দেয়, সেই সর্বোত্তম’ (বুখারি)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও রমজান মাসে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতেন। পবিত্র কোরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করতেন। এমনকি প্রতি বছর মাহে রমজানে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) বার বার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আল-কোরআন পুনরাবৃত্তি করতেন। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রমজান মাসে প্রতি রাতে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) নবী করিম (সা.)-এর খেদমতে হাজির হতেন এবং তারা উভয়ই কোরআন তিলাওয়াত করে একে অপরকে শোনাতেন’ (বুখারি)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) তার উম্মতদের রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াতের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যদি কেউ আল্লাহর সঙ্গে বাক্যালাপ করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন আল-কোরআন তিলাওয়াত করে।’ নবী করিম (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পাঠ করে, সে একটি নেকি পায়, আর প্রত্যেকটি নেকি ১০টি নেকির সমান’ (তিরমিজি)। তিনি আরো বলেছেন, ‘অন্তরের কলুষতা পরিষ্কার করার উপায় হলো বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা এবং কোরআন তিলাওয়াত করা’ (মিশকাত)।

মাহে রমজানে বেশি বেশি পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। এ জন্য মাহে রমজানে রোজাদার ব্যক্তি বেশি বেশি পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করেন। তাই রোজা ও কোরআন শরিফ কিয়ামতের দিন রোজাদারের জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবে এবং আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করবেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রোজাসমূহ এবং আল-কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজাগুলো বলবে, ‘হে প্রতিপালক! আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ আল-কোরআন বলবে, ‘আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। আল্লাহ তাদের সুপারিশ কবুল করবেন’ (বায়হাকি, মুসনাদে আহমাদ)।

ইসলামের চার খলিফা মাহে রমজানে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতেন এবং কোরআন শরিফ কয়েকবার খতম দিতেন। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) মাহে রমজানে সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতেন। মাহে রমজানে সাহাবায়ে কেরামরা কোরআন শরিফ মুখস্থ করে সংরক্ষণ করার জন্য রাত-দিন যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও কঠোর সাধনা করেছেন, তা ইসলামের অনুসারীদের কোরআন শরিফ বোঝার জন্য অনুকরণীয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা রাত্রিকালে আল্লাহর আয়াত আবৃত্তি করেন’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত-১১৩)। কোরআন তিলাওয়াতকারীর জন্য শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল-কোরআনে সুদক্ষ ব্যক্তিরা সম্মানিত ফেরেশতাদের সঙ্গী। আর যে ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করতে গিয়ে এর উচ্চারণ করা তার পক্ষে কঠিন হওয়ার কারণে বারবার চেষ্টা করে, সেই ব্যক্তি দ্বিগুণ সওয়াব লাভ করবে’ (বুখারি ও মুসলিম)।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS