মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মাধবপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান জয়-কে পুলিশে দিল ছাত্রজনতা স্বাধীনতা থেকে জুলাই চেতনার পালাবদল পেয়েছে: মোমিন মেহেদী আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে জামায়াতের ‘দায়িত্বশীল সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনলাইন পেমেন্ট সেবার চুক্তি অপরাধীদের কোন ছাড় নেই, মিলেমিশে রূপগঞ্জ গড়বো আমরা: মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ব্যতিত কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে জেলা ও মহানগর যুবদলের জন্য সতর্কবার্তা রবি’র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ফুটবল সেনসেশন হামজা চৌধুরী চুয়াডাঙ্গায় আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা সভায় নবাগত জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলাম আলমডাঙ্গার জেহালায় সার বিতরণে বিশৃঙ্খলা: অসাধু মহলের চাপ ও ষড়যন্ত্রের শিকার ডিলার উম্বাদ আলী জোয়ার্দার মুন্নু এগ্রোর প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ

নারীর গৃহস্থালী কাজের আর্থিক মূল্য রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতির দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারীর গৃহস্থালী কাজের আর্থিক মূল্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরূপন ও স্বীকৃতি, সরকারিভাবে ডে-কেয়ার সেন্টার, কর্মজীবি নারী হোস্টেল নির্মাণ এবং নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দের দাবিতে সমাবেশ ও অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।

নারীর গৃহস্থালী কাজের আর্থিক মূল্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরূপন ও স্বীকৃতি, সরকারিভাবে ডে-কেয়ার সেন্টার, কর্মজীবি নারী হোস্টেল নির্মাণ এবং নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দের দাবিতে আজ ২৩ মে ২০২৪ দুপুর ১২ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ শেষে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু।

বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি দীপালি রাণী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী, দপ্তর সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশা, অর্থ সম্পাদক কোহিনূর আক্তার কনা, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি সেলিনা ইয়াসমিন কনা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, দিলরুবা মুরী। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রওশন আরা রুশো, নূরজাহান ঝর্ণা।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোন কাজ নেই যার ফলাফল নেই। কাজ সেটা ছোট হোক বা বড় হোক তার প্রভাব পড়বেই। কিন্তু এমন অনেক কাজ আছে যে কাজের ফলাফল ছাড়া দৈনন্দিন জীবন অচল হয়ে পড়ে। মানুষের শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক জীবন বিকশিত হওয়া তো দূরের কথা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে কিন্তু সে কাজ হলো এমন ধরণের কাজ যার কোন স্বীকৃতি নেই, যে কাজের মর্যাদা নেই এমনকি যে কাজকে তাচ্ছিল্য করা হয় সবসময় আর যারা এই কাজ করেন তাদের কোন পারিশ্রমিক নেই। এই স্বীকৃতিবিহীন, মর্যাদাবিহীন, মজুরীবিহীন কাজের নাম গৃহস্থালি কাজ। এইসব কাজের ৮০ ভাগের বেশি করেন নারীরা। উদয়াস্ত ক্লান্তিকর এই গৃহস্থালি কাজ ছাড়া সমাজ ও পরিবার টিকে থাকা অসম্ভব। নারীর কাজের অর্থনৈতিক অবদান প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমতঃ মজুরীর বিনিময়ে কাজ এবং টাকা উপার্জনের জন্য স্বনিয়োজিত কাজ, যা জিডিপির হিসাবে যুক্ত হয়। দ্বিতীয়তঃ নারীর মজুরীবিহীন কিছু পারিবারিক কাজ যেমন হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগল পালন করে বিক্রি করা ইত্যাদি, এর আর্থিক মূল্য জিডিপিতে যুক্ত হয়। তৃতীয়তঃ নারীর গৃহস্থালি কাজ, যার বাজার মূল্য বা বিনিময় মূল্য নেই, যা বাজারজাত করা যায় না তা জিডিপিতে যুক্ত হয় না এমন কি শ্রম শক্তি হিসেবেও গণ্য হয় ना।

পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে নারীর গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি নেই বলে পরিবারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে গৃহিনী নারীদের অংশগ্রহণ তার স্বামী বা পরিবারের অন্য সদস্যরা খুব একটা গ্রহণ করেন না। অর্থাৎ সংসারে নারীদের দায়িত্ব যত আছে অধিকার সে পরিমানে নেই। বিশ্বের অনেক দেশেই বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামী-স্ত্রীর মাকে সমান সম্পত্তি ভাগ করার আইন আছে। অর্থাৎ যদি ২০ বছর সংসার করার পর কোন স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাহলে এই ২০ বছরে সৃষ্ট মোট সম্পত্তি সমান সমান ভাগ হবে। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা হলো সংসার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নারীর শারীরিক-মানসিক শ্রম থাকা সত্ত্বেও নারীরা স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর সম্পত্তির প্রায় কোন অংশই পান না। ফলে গৃহিনীরা অসহায় হয়ে পড়েন। অনেক সময় আর্থিক নিশ্চিয়তা নেই বলে অনেকে অত্যাচারিত হয়েও স্বামীর সাথে থাকতে বাধ্য হন। অথচ বিয়ের পর ঐ সংসারের যা কিছু সম্পদ-সম্পত্তি অর্জিত হয়েছে গৃহিনী নারীরও সেখানে পরিপূরক ভূমিকা আছে। গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য নিরূপণ ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থাকলে পরিবারের ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হতো। পারিবারিক নির্যাতনও কমত্যে।’

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘বাজেট শুধু অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নয়, বাজেটের মাধ্যমে সরকারের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গীও প্রতিফলিত হয়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর অগ্রযাত্রার সাথে দেশের এগিয়ে যাওয়াও যুক্ত। অথচ আমাদের দেশে প্রতি বছর যে জেন্ডার বাজেট হয় তা জাতীয় বাজেটের মাত্র ১ শতাংশের মতো যা মূলত বিভিন্ন ভাতা প্রদানেই সীমাবদ্ধ। ভাতাগুলোর পরিমাণও খুব সামান্য। যেসব কারণে নারীরা কর্মক্ষেত্রে আসতে পারেন না বা কর্মক্ষেত্র থেকে ঝড়ে পড়েন, ঐসব বাধাগুলো দূর করার কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য বাজেটে তেমন কোন বরাদ্দ থাকে না। সরকারি উদ্যোগে উপজেলায় উপজেলায় ডে-কেয়ার সেন্টার ও কর্মজীবি নারী হোস্টেল নির্মাণের জন্য বাজেট বরাদ্দ করলে অনেক নারী কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারে। নারীবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, মাতৃসদনে পর্যাপ্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য খুব বেশি বাজেট বরাদ্দ লাগে না। কিন্তু এগুলোতে সরকারের মনোযোগ খুব কম।’

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম মনে করে নারীর সম অধিকার নিশ্চিত করা এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে সমাজে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে যেসকল প্রতিবন্ধকতা তা দূর করার কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং সেসকল ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখতে হবে। পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নারীর শ্রমের অবদানের স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS