নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এবারের ঈদুল আজহার ঈদযাত্রায় ২৩ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়ক, নৌ ও রেলপথে দুর্ঘটনায় ৩৬৮ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে শুক্রবার (১৪ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি।
রোড সেফটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ঈদুল আজহার সময়ে দেশে ৩০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৩১ জন। যার মধ্যে নারী ৬১ এবং শিশু ৭২ জন। একই সময়ে ১৪টি নৌ দুর্ঘটনায় ২১ জন এবং রেলপথে ২৭টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
তাদের প্রতিবেদন বলছে, দুর্ঘটনার ৪৩ দশমিক ২৩ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে। অন্যদিকে আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনার হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। সংগঠনটির হিসাবে, দুর্ঘটনার ৪৯ শতাংশের বেশি ঘটেছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। এরপরে আছে থ্রি–হুইলার যাত্রী ও পথচারী। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানের মধ্যে মোটরসাইকেল ১২২টি, থ্রি-হুইলার ১১৮টি (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি) এবং বাস ৯৭টি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সম্পর্কে সংগঠনটি বলেছে, অন্য যানবাহনের ধাক্কা বা চাপায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সাড়ে ৩৯ শতাংশ। মোটরসাইকেলে নিহত ব্যক্তিদের ৫২ দশমিক ৮৩ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০।
দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি (৩০.৬৯ শতাংশ)। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দিক থেকে এগিয়েও ঢাকা (৩০.৫৫ শতাংশ)। ঢাকায় ৯৩টি দুর্ঘটনায় ৯৯ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে (৩.৯৬ শতাংশ)। এতে প্রাণহানি ৪.৯৩ শতাংশ। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬.৮৩ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ১৩.২০ শতাংশ ও রাজশাহী বিভাগে ১২.২১ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সংগঠনটি জানায়, এবারের ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ২১ দশমিক ৬ জন নিহত হয়েছেন। যা গতবার ছিল ২৫ দশমিক ৯১ জন। এবারের ঈদযাত্রায় মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেশি থাকায় প্রাণহানি কম হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।
ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি ও মানসিকতা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহনে চাঁদাবাজিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে রোড সেফটি।
এছাড়াও সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে কিছু সুপারিশও করেছে ফাউন্ডেশনটি। সুপারিশগুলোর মধ্যে: দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, স্বল্পগতির যানের জন্য সার্ভিস রোড (পার্শ্বরাস্তা), উন্নত গণপরিবহন এবং সড়ক পরিবাহন আইন বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply