নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অদ্য ২৬ মে ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের আয়োজনে ঢাকাস্থ প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে সনাতন শাস্ত্রীয় আইন পরিবর্তনে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল, জুতা নিক্ষেপ, থুথু নিক্ষেপ, কুষ্পুত্তলিকা দাহ, বিক্ষোভ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সভাপতি দীপংকর শিকদার দীপুর সভাপতিত্বে উক্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত, এডভোকেট বাসুদেব গুহ, এডভোকেট প্রকাশ হালদার, এডভোকেট সঞ্জয় দে দুর্জয়, এডভোকেট সুমন সাহা, বিপুল বার, অমর চক্রবর্তী, স্বপন কুমার শিপু, সোহাগ, রুপম সরকার, শ্যামল দাস, নমিতা দাস, উজ্জল কর্মকার, ভক্তসংঘ সোসাইটির নিত্য গোপাল ঘোষ, অনীল পাল, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাক সাংবাদিক শ্যামল নাগ, বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ জোটের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দাস, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘের আকাশ শীল, হিমেল, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদসহ সমমনা অন্যান সংগঠনের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিস্ত্রী তার বক্তব্যে সনাতন আইন পরিবর্তনকে দেশকে হিন্দু শূণ্য করার একটা কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন হিন্দুদের আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে হিন্দুরাই করতে পারে, এইজন্য এনজিও, বিদেশীমদদদাতাসহ হিন্দু ধর্ম থেকে বিচ্যুত ব্যক্তির প্রয়োজন হবে না। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা দেবীর আসনে অধিষ্টিত এবং পারিবারিকভাবে যথেষ্ট সুরক্ষিত। অনতিবিলম্বে এই আইন পরিবর্তনে স্বার্থন্বেষী মহল ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)’র সাধারণ সম্পাদক এড. সুমন কুমার রায় বলেন, হিন্দু পারিবারিক আইন শুধু আইন নয়, এটা একটা বৈদিক শাস্ত্র, যা হাজার বছর ধরে সুরক্ষিত। হিন্দু নারীদের এই সুরক্ষাকে ভেঙ্গে দিতে কিছু স্বার্থন্বেষী মহল আইন পরিবর্তনের নামে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই কালো আইন হিন্দু পরিবারের মাঝে শুধু বিভেদ সৃষ্টি করবে না, বহুদিনের সনাতনী বন্ধন বিনষ্ট করবে। এই কালো আইন পাশ হলে আগামী দিনে সনাতনী সম্প্রদায় আগামী নির্বাচনে ভোট বর্জনসহ আওয়ামী লীগকে বর্জন করবে। তিনি অনতিবিলম্বে এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শ্যামল নাগ এই ধরনের কালো আইন পাশ না করার জন্য মাননীয় আইন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ জোটের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দাস বলেন, হিন্দু আইন পরিবর্তনকারীদেরকে ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দিয়ে তাদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই তাদেরকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র মহাসংঘের পিযুস দাস বলেন, এই পরিবর্তন করা হলে দেশের হিন্দু নারীরা পারিবারিকভাবে সুরক্ষা হারাবে, একসময় ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হবে। তাই সরকারের কাছে এই আইন বন্ধের জোর দাবী জানাচ্ছে।

ভক্ত সংঘ সোসাইটি বাংলাদেশ-এর পক্ষে অনিল পাল বলেন, হিন্দু আইন সনাতন শাস্ত্রীয় আইন। এই আইন স্বয়ং ঈশ^র কর্তৃক প্রদত্ত আইন। এই আইনকে সংস্কারের নামে কিছু স্বার্থন্বেষী মহল পারিবারিক সুরক্ষা ভেঙ্গে দিতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা এহেন কর্মকান্ডকে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সনাতন কল্যান জোট-এর পক্ষে শ্যামল ঘোষ বলেন, হিন্দু আইন সংস্কারের নামে বিবাহ-বিচ্ছেদ চালুসহ পারিবারিকভাবে সুরক্ষিত হিন্দু নারীদের রাস্তায় নামাতে বাধ্য করতে দেশের বিতর্কিত কতিপয় এনজিও, কিছু দুস্কৃতিকারীরা ষড়যন্ত্র করছে। অনতিবিলম্বে এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে। বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সভাপতি বরুন চন্দ্র সরকার ও মহাসচিব শ্যামল কান্তি নাগসহ নেতৃবৃন্দ এই আইন পরিবর্তন, পরিবর্ধন হবে না বলে দাবি জানান এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারন্যাশনাল শ্রী শ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন এর হালদার প্রবীণ জানান সনাতন শাস্ত্রীয় আইন কোনভাবেই পরিবর্তন হতে দিবেনা বাংলাদেশের সকল হিন্দু সম্প্রদায়।

এছাড়াও উপস্থিত বিভিন্ন বক্তাগন হিন্দু আইন পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নানা মতামত ও ষড়যন্ত্রেযুক্ত দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে। অনতিবিলম্বে এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্রকে বন্ধ করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

বক্তাগণ সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করাসহ সনাতন শাস্ত্রীয় আইন নিয়ে ভবিষ্যতে কোন ছেলে-খেলা না করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সর্বশেষ বক্তাগণ হিন্দু আইন পাশ না করার জন্য এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট বিভাগের কতিপয় স্বার্থন্বেষী মহল কর্তৃক দায়েরকৃত রিট বাতিলের জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।