নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রতিনিয়ত মশা, মাছি ও নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করছেন গাইবান্ধা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বানিয়ারজান এলাকার শতাধিক পরিবার। আবাসিক এলাকায় পৌর শহরের আবর্জনার ডাম্পিং স্টেশন হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এসব পরিবারের লোকজন। সার কারখানা গড়ার আশ্বাস দিয়ে জায়গা নিয়ে জনবসতি এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ময়লার ভাগাড়। এতে ওই এলাকার লোকজনের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, স্বাস্থ্যহীনতাসহ নানা রোগব্যাধি।
২০০৪ সালে প্রথম মাঝারি শহর প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ শুরু হলেও ২০০৯ সালে স্ট্রিপ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে ডাম্পিং স্টেশনের কাজ শুরু হয়ে তা শেষ হয় ২০১০ সালে। তখন থেকেই ভোগান্তিতে আছেন এ এলাকার শতাধিক পরিবার।
বানিয়ারজান এলাকার রেজাউল ইসলাম জানান, সার কারখানা করার আশ্বাস দিয়ে এখানে জমি অধিগ্রহণ করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এলাকার লোকজনের কর্মসংস্থান হবে জেনে জমি দিলেও তা পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ময়লার ভাগাড় তৈরি করে। বিভিন্ন সময় এটি নিয়ে এলাকার লোকজন আন্দোলন করলেও কোনো লাভ হয়নি।
মধ্য বানিয়ারজান এলাকার আশরাফুল ইসলাম জানান, ময়লা আবর্জনার ডাম্পিং স্টেশনের ফলে আশপাশের বাড়িতে ময়লার দুর্গন্ধ এবং মাছির উপদ্রবে বসবাস করা যাচ্ছে না। স্বাভাবিক নিশ্বাস তো দূরের কথা মানুষের চলাফেরা করতে হয় নাক রুমালে ঢেকে। অতিরিক্ত মাছির উপদ্রবে দিনের বেলাও মশারি টানিয়ে খাবার খেতে হচ্ছে। দুর্গন্ধ ও জীবাণুর ফলে বাসিন্দারা ডায়রিয়াসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি ওই এলাকার মেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত হচ্ছে না এ ডাম্পিং স্টেশনের কারণে। শুধু তাই নয় পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আলাই নদীর একাংশ ভরাট হয়ে গেছে ময়লা দিয়ে। দূষিত হয়ে গেছে নদীর পানি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জায়গা নির্ধারণের প্রথম দিকে সার কারখানা করার আশ্বাস দিলেও পরে তা পরিণত হয় ময়লা ফেলার ডাম্পিং স্টেশনে। দুর্গন্ধের জন্য পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারছে না ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা। বারবার জানানো হলেও ডাম্পিং স্টেশনটি স্থানান্তরের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, গাইবান্ধা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কমিশনার মো. আবু বকর সিদ্দিক স্বপন অভিযোগের কথা স্বীকার করে জানান, আবাসিক এলাকায় এ ধরনের ডাম্পিং স্টেশন কোনোভাবেই কাম্য নয়। জনসাধারণের ভোগান্তি নির্মূলে তিনিও ডাম্পিং স্টেশনটি স্থানান্তরের দাবি জানান।
গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান বলেন, এটি তার নির্বাচনী সময়ে করা হয়নি। জনসাধারণের অসুবিধার কথা চিন্তা করে দুর্ভোগ কমাতে প্রতিদিন জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডাম্পিং স্টেশনটি স্থানান্তর অথবা আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply