চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের নীলমনিগঞ্জ বাজারে অনলাইন সাইটে অধিক মুনাফার লোভে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন এক বিকাশ এজেন্ট ও মোবাইল সার্ভিসিং দোকানের মালিক। রাকিবুল ইসলাম নামের ওই যুবক রাতারাতি ‘লাখপতি’ হওয়ার আশায় ধারদেনা করে এই অর্থ বিনিয়োগ করেন এবং ধরা পড়ে টাকা পরিশোধের চাপ এড়াতে একসময় উধাও হয়ে যান।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মোমিনপুর ইউনিয়নের নীলমণিগঞ্জ বাজারের পাটকাটি হাট সংলগ্ন এলাকায় মোবাইল সার্ভিসিং এবং বিকাশ-নগদ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। হঠাৎ দ্রুত বড়লোক হওয়ার আশায় তিনি একটি অনলাইন বিনিয়োগ সাইটে কাজ শুরু করেন।
গত সোমবার ১১ নভেম্বর তিনি আড়াই লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। এই টাকার বেশিরভাগই ছিল বিকাশের এবং বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার করা। সাইট কোম্পানি পরের দিন আরও আড়াই লক্ষ টাকা বিনিয়োগের জন্য চাপ দেয়।
একদিনে এত টাকা জোগাড় করতে না পেরে এবং পাওনাদারদের চাপের মুখে রাকিবুল ইসলাম বাজার থেকে উধাও হয়ে যান। তার দোকান বন্ধ দেখে বাজার মালিক সমিতি সেটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পরদিন, মঙ্গলবার সকালে রাকিবুল ফিরে এসে জানান, তিনি সমস্ত টাকা পরিশোধ করবেন। এরপর তিনি মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন এবং গরু-ছাগল বিক্রি করে আবারও আড়াই লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন সেই একই অনলাইন সাইটে, ৮ লক্ষ টাকা পাওয়ার আশায়।
তবে, এবারও তিনি টাকা পাননি। দিশেহারা রাকিবুলকে খুঁজতে পাওনাদার বিকাশ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজন তার দোকানে ভিড় করে। পরে মুন্সিগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়।
রাকিবুলকে দোকানে ফিরিয়ে আনার পর তার পরিবারের লোকজন পাওনাদারদের আংশিক টাকা পরিশোধ করেন বলে জানা যায়। একসময়কার গণঅধিকার পরিষদের সাবেক এই নেতার এমন কাণ্ডে নীলমণিগঞ্জ বাজার এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং ঘটনাস্থলে অসংখ্য লোক জড়ো হয়।
অবশেষে, বাজার কমিটি এবং পরিবারের জিম্মায় বাকি টাকা পরিশোধের শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
টাকা হারানোর শোকে রাকিবুল ইসলাম বর্তমানে দিশেহারা। এনজিও, ব্যাংক এবং বিভিন্ন স্থানে তার বড় অঙ্কের লোন রয়েছে বলে জানা গেছে। অতিরিক্ত লাভের আশায় বিনিয়োগ করে তিনি এখন সর্বস্বান্ত।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply