বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন

ভৈরবে জামিনে মুক্তি পেয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

ইমন মাহমুদ লিটন
  • আপডেট : বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৮৪ Time View

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জামিনে মুক্তি পেয়েই সংঘর্ষে জরিয়েছে দুই বংশ। এতে আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ। 

নিখোঁজ রয়েছে একই পরিবারের ৩ জন। আজ বুধবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১২ টায় উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে কর্তাবাড়ি আর সরকার বাড়ীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে বাচ্চু (৬২), তুমিন (১৮), দিদার (২০), মোস্তফিজুর (২৬), শুক্কুর (৪৫), ফেরদৌস (৪৫), সাধু মিয়া (৪০), রুনা বেগম (৩৫), মিজানুর রহমান (৫৫), তুষার (২০), বাবু (৩০), আফরুজা (২৬), আক্কেল (৪৫), মোকারম (২২), সেলিম (২২), মুছা (২২), ফাহিম (১৭), শাকিল (১৮) মহরম (৭০) মমিন (২৫) সহ ২৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে রুনা বেগম (৩৫), মিজানুর রহমান (৫৫) কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্যরা কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

জানা যায়, ঈদের আগের দিন ফুটবল খেলা নিয়ে কর্তাবাড়ী ও সরকারবাড়ীর লোকজনের মধ্য সংঘর্ষ বাঁধলে কর্তা বাড়ির নাদিম মিয়া গুরুতর আহত হয়। ১৯ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। মৃত্যুর পর নাদিমের পরিবার সরকারবাড়ির লোকজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সরকার বাড়ির ৬৯ জন কিশোরগঞ্জ কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক। ১৩ আগস্ট সরকার বাড়ির লোকজন জামিনে মুক্তি পায়। আজ (১৪ আগস্ট) বাড়ি ফেরার পথে দুই বংশর মধ্যে সংঘর্ষ বাদে। এসময় উভয় পক্ষ ইট পাটকেল, দা, বল্লম, টেটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। থেমে থেমে ৪ ঘন্টা চলে এই সংঘর্ষ। এতে শতাধিক আহত হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষে একই পরিবারে তিনজন পানিতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে জানায় নিখোঁজের পরিবার। দফায় দফায় সংঘর্ষে কর্তাবাড়ির অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে সরকার বাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে আনে। 

এ বিষয়ে কর্তা বাড়ির সালেহা বেগম জানান, আামার স্বামী আল আমিন মিয়া বাসুর শরিফ মিয়া ও চাচাতো ভাই সাগরকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সংঘর্ষে নাকি টেটা বিদ্ধ হয়ে পানিতে পড়েছে তারা। সংঘর্ষে আতঙ্কে এখনো পানিতে খোঁজতে যেতে পারিনি। 

এ বিষয়ে কর্তা বাড়ীর নেতা সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন, ১৩ আগস্ট আমাদের বাড়ির নাদিম হত্যা মামলায় সরকার বাড়ির আসামীরা জামিনে বের হয়। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিটিং করে পরিকল্পিত ভাবে আজ  আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমাদের বংশের অনেকে গুরুত্বর আহত হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করেছে সরকার বাড়ির লোকজন। স্বাধীনতার আগে আমাদের বংশের রইছ উদ্দিনকে খুন করে সরকার বাড়ীর লোকজন। ১৯৭৩ সালে খুন করে আমার বাড়ীর কফিল উদ্দিনকে। পরে খুন করল তার ছেলে নাদিমকে। একের পর এক খুন করছে তারা। আওয়ামীলিগের ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা ত্রাসের রাজত্ব তৈরী করেছে এলাকায়।

এ বিষয়ে সরকার বাড়ির আল আমিন জানান, আমরা জামিনে বের হয়ে বাড়িতে আসতেই কর্তাবাড়ির লোকজন আমাদের হামলা করে। আমাদের হত্যা মামলার আসামী করে বাড়িঘর খালি পেয়ে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে কর্তা বাড়ির লোকজন। আজ সংঘর্ষে আমাদের সরকার বাড়ির অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের বিষয়ে আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS