শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন স্থগিত তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ ঢাকা ব্যাংকের মানবতন্ত্র চর্চা ও কবিদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী হবিগঞ্জের যুব সমাজকে মাদকের থাবা থেকে রক্ষায় কাজ করছে পুলিশ, পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৭ দিনে গ্রেপ্তার ১৫১ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে ২ বিভাগে ক্যারিয়ার কার্নিভাল ২০২৫: কর্মসংস্থানের পথে কক্সবাজারের তরুণদের নতুন যাত্রা কালিয়ায় শ্রমিকের টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ ব্রীজ নির্মাণ কোম্পানি ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ ব্র্যাক ব্যাংকের মতিন স্পিল ভ্যাংশ ঘোষণায়ের

পাবনা শহরে শত শত চড়ুই পাখির কলরবে থমকে যান পথচারীরা

মোহাম্মদ আলী স্বপন
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪

পাবনা প্রতিনিধি: আহা! কী নির্মল আনন্দ ! এ আনন্দ, এ কোলাহল পাখিপ্রেমীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মুহূর্তের জন্যেও হলেও মনটা ভরে ওঠে প্রশান্তিতে। আমরা জানি, সাধারণত বন-জঙ্গলই পাখিদের অভয়ারণ্য হয়, এটাই স্বাভাবিক। গাছ -গাছালিতে পাখিরা আশ্রয় নেয় বহু প্রাচীনকাল থেকেই। কিন্তু পাবনায় দেখা যাচ্ছে, ভিন্ন চিত্র। বিকেল-সন্ধ্যা হলেই হাজার হাজার পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত এখন পাবনা শহর। তাও আবার ব্যস্ততম প্রধান সড়ক অর্থাৎ আব্দুল হামিদ সড়কে।

চড়ুই চঞ্চল প্রকৃতির পাখি। মানুষের আশপাশে বসবাস করতে ভালোবাসে। ঘরের চালায়, ছাদের কার্নিশে বাসা বেঁধে বাস করে নিশ্চিন্তে। পাবনার মধ্যশহর এখন নিত্যদিন কলকাকলিতে মুখর। ভোর হতেই চড়ুই পাখি দল বেঁধে ছুটে চলে  আহারের সন্ধানে। আবার সূর্যাস্তের লাল আভা শেষ হওয়ার আগেই দূর-দূরান্ত থেকে আহার শেষে আশ্রয় নেয় পাবনা শহরের মাঝখানে।

শহরের মাঝখান বলতে তাদের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে মেইন রোডের দু’পাশের বৈদ্যুতিক তারে। যেন কত প্রশান্তির নীড় তাদের ! তখনই পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা শহর। নীড়ে ফিরে ক্ষণিকের জন্য তারা যেন খুনসুটিতেও মেতে ওঠে। এ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পথচলতি ব্যস্ত পথিকরাও কিছুক্ষণের জন্য থমকে যান।

অবাক বিস্ময়ে পথিকরা তাকিয়ে দেখেন প্রকৃতির সৌন্দর্য এই ছোট্ট-চঞ্চল পাখির ওড়া-উড়ি, নাচা-নাচি। উপভোগ করেন কোলাহলমুখর এ পরিবেশ। এখানে কেউ পাখি শিকার বা ইট-পাটকেল ছুঁড়তে পারে না। বিদ্যুতের তারে তারে গায়ে গায়ে বসে থাকে অগণিত চড়ুই পাখি। যানবাহনের অস্বাভাবিক শব্দও সয়ে গেছে তাদের। মানুষের তীর্যক দৃষ্টিও উপেক্ষা করে বসে থাকে তারা নির্বিঘ্নে, শঙ্কাহীনভাবে।

কিন্তু অতি সম্প্রতি তাদের সুখের নীড়ে আগুন জ্বালিয়ে দিল কে ? প্রকৃতির সৌন্দর্য মায়াবী এ চড়ুই পাখির সংখ্যা হঠাৎ করেই কেন কমে গেল পাবনা শহর থেকে ?

এ ব্যাপারে কথা হয় প্রধান সড়কের ফুটপাথের ফল ব্যবসায়ী মনির সঙ্গে। মনি ৮-৯ বছর হক সুপার মার্কেটের সামনে পেয়ারা, কলা, আনারস, বেলসহ নানারকম মৌসুমী ফল বিক্রি করে থাকেন। মনি জানায়, পাখিরা বিকেল ৫ টার দিকে আসে আর ভোরে চলে যায়। কিন্তু কয়েকদিন হলে পাখির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে ব্যাপক আতসবাজির শব্দে হয়তো চড়ুই পাখি ভয় পেয়েছে। এ কারণে পাখির সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে।

ফুটপাথের ডিম ব্যবসায়ী রমজান জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর এখানে ব্যবসা করছি। অনেকে এসে ছবি তোলে , ভিডিও করে, আমাদের খুব ভালো লাগে। উপর থেকে পাখির মল যাতে আমার কাস্টমারের গায়ে না লাগে, খাবার যাতে নষ্ট করতে না পারে সেজন্য উপরে ঢাকচালি বেঁধে নিয়েছি। তাও চড়ুই পাখিরা নিরাপদে থাকুক এই ভেবে।

ওষুধ ব্যবসায়ী সোহেল জানায়, মাঝে মধ্যে বিরক্ত হই চড়ুই পাখিরা পায়খানা করে কাপড়- চোপড় নষ্ট করে দেয়, দোকানের সামনে পায়খানা করে নোংরা করে দেয় এ কারণে। তবে খুব ভালোই লাগে তাদের কিচির মিচির শব্দে গ্রামীণ একটা পরিবেশ বিরাজ করে শহরে এ কথা ভেবে। সব মিলিয়ে আমরা পাখিদের সাথে ভালোই আছি।

রোটারিয়ান সাইদুর রহমান, কবি বন্দে আলী মিঞার বাড়ির সামনেই যার নিবাস, কর্মস্থল কুষ্টিয়া হলেও সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাবনা শহরে প্রবেশ করেন। তিনি জানান, পাখিরা পরিবেশ বান্ধব, পাবনার মাঝ শহরে পাখিদের এমন অভয়ারণ্য বড়ই ভাল লাগে। আমার কাছে অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর, দৃষ্টিনন্দন লাগে চড়ুই পাখিদের এমন কিচির-মিচির আওয়াজে মিষ্টি ধ্বনির কোলাহলমুখর পরিবেশ। বিকেল হলেই হাজার হাজার পাখি ছুটে আসে শহরে, পাখি আর মানুষের শহরে একসাথে বসবাস ভাবতেই যেন অবাক লাগে !

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS