শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে হুমকি-গালিগালাজ: আলমডাঙ্গার চেয়ারম্যান বিপুল-এর বিচার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ডিকেআইবি চুয়াডাঙ্গা জেলার দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সার ব্যবসায়ী গ্রুপ এর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ‘৪ দেশের বিশেষজ্ঞ টিম আসছে বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে করতে’ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকা আজ চতুর্থ ওমরাহ পালনে যাওয়ার আগেই রিটার্ন টিকিট ক্রয় করতে হবে কুমিল্লা অঞ্চলের ১৯ জন শাখা ব্যবস্থাপককে অনুপ্রাণিত করল ন্যাশনাল ব্যাংকের “ম্যানেজার্স মিট” তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ ঘোষণা ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন স্থগিত তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ ঢাকা ব্যাংকের

সালাম নিয়ে প্রচলিত কয়েকটি ভুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইসলামই এমন এক ধর্ম, যে ধর্মের অভিবাদন জানানো হয় দোয়া করে। আর সে দোয়াটি হলো সালাম। একজন ভাই অন্যজনের সঙ্গে দেখা হলেই ইসলাম সালাম দেয়ার তাগিদ দেয়। আর এ সালামই হলো অপর ভাইয়ের জন্য দোয়া। আসসালামু আলাইকুম অর্থ আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।

তাই তো সালাম শান্তির পয়গাম। ঘরে-বাইরে সব জায়গায় সালাম প্রচার-প্রসারের আদেশ দিয়েছেন রসুল সা.। সালাম নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু ভুল প্রচলন রয়েছে। এ ভুলগুলো অবশ্যই পরিহার করা উচিত। আর সালামের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহ তাআলা কোরআনে বেশ কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে ও তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না।’ (সূরা নূর ২৭ আয়াত)

তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এ হবে আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র অভিবাদন।’ (সুরা নুর ৬১)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয় (সালাম দেওয়া হয়), তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন কর অথবা ওরই অনুরূপ কর।’ (সুরা নিসা ৮৬)

তিনি আরো বলেন, ‘তোমার নিকট ইবরাহিমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি? যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, ’সালাম’। উত্তরে সে বলল, ’সালাম’। (সুরা যারিয়াত ২৪-২৫)

সালামের প্রতি গুরুত্বারূপ করে আল্লাহর রসুল সা. বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, সর্বোত্তম ইসলামি কাজ কী? তিনি বললেন, (ক্ষুধার্তকে) অন্নদান করবে, পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে (ব্যাপকভাবে) সালাম পেশ করবে। (বুখারি ১২, ২৮, ৬২৩৬, মুসলিম ৩৯, তিরমিজি ১৮৫৫, নাসায়ি ৫০০০, আবু দাউদ ৫১৯৪, ইবনু মাজাহ ৩২৫৩, ৩৬৯৪, আহমাদ ৬৫৪৫, ৬৮০৯, দারেমি ২০৮১)


ইসলামে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সালাম। এ বিষয়ে আমরা অনেক সময় অনেক ভুল করে থাকি। আজকে সালামের এমন কয়েকটি ভুল নিয়ে আলোচনা করবো।

১. আমরা অনেকে মনে করি খাওয়ার সময় সালাম দেয়া নিষিদ্ধ নয়। সব গবেষক একমত, খাওয়ার সময় সালাম দেয়া যাবে। ২. সালাম দিলে ৯০ নেকি, উত্তর দিলে ১০ নেকি, এমন কোনো হাদিস নেই। সম্পূর্ণ সালাম দিলে ৩০ নেকির কথা রয়েছে হাদিসে। ৩. অমুসলিমদের সালাম দেয়া বা তাদের সালামের উত্তর দেওয়া নিষেধ। তবে শুধু ‘ওয়ালাইকুম’ বলা যাবে। ৪. কেউ সালাম না শুনলে তাকে আবার শুনিয়ে সালাম দিতে হবে। অনেকে বলে ভাই সালাম দিয়েছি তো। বরং যতক্ষণ না শুনে ততক্ষণ সালাম দিতে থাকুন। প্রতিবারই আপনার সওয়াব লেখা হচ্ছে।

৫. মনে মনে বা নীচু স্বরে নয়, বরং সালামের উত্তর শুনিয়ে উঁচু স্বরে দিতে হয়। ৬. ছোট বা অধস্তনদেরই সালাম দিতে হবে এমনটি আবশ্যক নয়। সবাই সবাইকে সালাম দেবে। ৭. বক্তৃতায় ভূমিকা বা সম্বোধনের পর সালাম দেওয়া উচিত নয়, বরং সালাম দিয়ে বক্তৃতা শুরু করা উচিত। শুরুতে সালাম দিয়ে শুরু করলে শেষে আর সালাম দিতে হবে না। ৮. সঠিক শব্দে সালাম দেওয়া। হাদিসে বর্ণিত শব্দে সালাম দেওয়া আবশ্যক। অন্যথায় শুদ্ধ হবে না।

৯. সালাম দানে পরিচিত-অপরিচিতের পার্থক্য করা অনুচিত। সবাইকে সালাম দেওয়ার কথা হাদিসে এসেছে। ব্যাপকভাবে সালাম দিতে হবে। ১০. ফোনে আগে হ্যালো না বলে সালাম দেওয়া উচিত। ১১. সালামের উত্তর দিয়ে ফের সালাম দেয়ার নিয়ম নেই। উত্তরের মাধ্যমেই সালাম পূর্ণ হয়ে যায়। অনেকে সালামের উত্তর দিয়ে আবার তাকে সালাম দেয়। না এটার প্রয়োজন নেই। ১২. সালামের উত্তর না দিয়ে উল্টো সালাম দেওয়া সঠিক নয়। কেউ সালাম দিলে উত্তর দেয়া আবশ্যক। ১৩. ইশারায় নয়, বরং মুখে সালাম দেয়াই নিয়ম। তবে যদি দূরত্বের কারণে আওয়াজ না পৌঁছে, তাহলে মুখে সালাম দিয়ে ইশারায় বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।


সালামের জবাবে ‘অলাইকুম সালাম’ বলা


আমাদের অনেকেরই সালাম দিতে গিয়ে বা সালামের উত্তর দিতে গিয়ে অজান্তেই ভুল হয়ে যায়। সালাম একটি দোয়া। ইসলামের শেআর ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল। এর সহিহ উচ্চারণের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কমপক্ষে এতটুকু বিশুদ্ধ উচ্চারণ অবশ্যই জরুরি, যার দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে।

وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম, ওয়া রাহমাতুল্লাহি, ওয়া বারাকাতুহু’ আরবি দেখে এর সহিহ উচ্চারণ শিখে নেয়া  উচিত। অন্যথায়  ন্ঠ বাদ পড়ে যায়- ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’-এর স্থলে ‘অলাইকুম’ হয়ে যায়, যা স্পষ্ট ভুল। 

আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, আমরা অনেক সময়ই সালামের পূর্ণ জবাব দিতে কার্পণ্য করে থাকি। পুরো উত্তর বলি না, দায়সারাভাবে উত্তর দিই। অথচ আল্লাহ তাআলা কুরআনেই শিখিয়েছেন, কেউ সালাম দিলে তার চেয়ে উত্তম শব্দে উত্তর দেয়া চায়। সুরা নিসার ৮৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন কেউ তোমাদের সালাম করে, তখন তোমরা তাকে তদপেক্ষাও উত্তম পন্থায় সালাম (জবাব) দিও কিংবা (অন্ততপক্ষে) সেই শব্দেই তার জবাব দিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসাব রাখেন।’


সালামের জবাব না দিয়ে ‘কেমন আছেন’ বলা

অনেক মানুষকেই দেখা যায় সালামের জবাব না দিয়ে বলে, ‘কেমন আছেন?’ বা সালামের উত্তর কোন রকম দিয়ে কেমন আছেন বলতে ব্যস্ত হয়ে যায়। এ কাজটি ঠিক নয়। কেউ সালাম দিলে তার জবাব দেয়া ওয়াজিব। তাই আগে স্পষ্টভাবে শুনিয়ে সালামের জবাব দিতে হবে, তারপর কুশল বিনিময়ের সময় থাকলে তা করবে। কিন্তু সালামের জবাব না দিয়ে বা কোন রকম সালামের উত্তর দিয়ে কেমন আছেন বলাটা একেবারেই অনুচিত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS