মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) আরও সতর্ক প্রহরায় থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশে অবস্থান করা মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয় ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা যাতে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে কোনো অপতৎপরতা চালাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, তল্লাশি ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঠেকাতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ অভিযানে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা হবে। আরসা ও আরাকান আর্মির কেউ যেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকতে না পারে, সে জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রয়োজন মোতাবেক সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযান হতে পারে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান চলবে। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান চলবে। ক্যাম্প থেকে যেন কোনো রোহিঙ্গা বের হয়ে না আসতে পারে, সে জন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি, ওয়াচ টাওয়ার হয়েছে, সেখানে নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা আছে। সেগুলো আরও জোরদার করা হবে; যাতে তারা বাইরে না আসতে পারে। যৌথ টহলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর থাকবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করা হবে, যাতে নতুন করে মিয়ানমারের কোনো নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে চৌকি ও বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) বাড়ানো হবে। বিজিবিকে শক্তিশালী করতে যা যা প্রয়োজন, সেগুলো করা হবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতা বেগবান করতে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, জন্মনিয়ন্ত্রণ, পরিবার-পরিকল্পনা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন নিয়ে আলাপ হয়েছে। সীমান্তে নাফ নদীতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মৎস্যজীবীরা মাছ ধরেন। সে কারণে বাংলাদেশের মৎস্যজীবীদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে, যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে ক্রিস্টাল মেথ বা আইসের একটি চালান ধরা পড়ে। একটি চালান আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে পেয়েছি। সে কারণে ক্যাম্পে ক্যাম্পে যৌথ টহল ও তল্লাশি করা হবে। সীমান্ত দিয়ে যাতে মাদক আসতে না পারে, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। নতুন প্রজন্মকে মাদকের ছোবল থেকে বাঁচাতে হবে।’
আর এ কারণেই মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনবোধে সেনাবাহিনীকেও ডাকা হবে। কোনোভাবেই মাদকের কারবার সেখানে হতে দেয়া হবে না। সেখানে যাতে রক্তপাত না হয়, সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘রোহিঙ্গাদের কিছু সংখ্যক দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে, সবাই না। কিন্তু এটা কেটে যাবে। কিন্তু আর কত দীর্ঘসময় তাদের আমরা রাখব। আমরা চাই তারা নিজ দেশে ফিরে যাক,’ বলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS