বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মালয়েশিয়ার ১০ শর্ত প্রত্যাহার ও ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ বায়রার জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে বিশেষ ছাড়ে চিকিৎসা সেবা পাবেন আইএফআইসি ব্যাংকের গ্রাহক ও কর্মীরা জনগণের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়াটাই দেশপ্রেম, বিভাগীয় কমিশনার গাইবান্ধার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লার সাথে জেলার গণমাধ্যম কর্মীদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত তারেক রহমানকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে কনটেন্ট ক্রিয়েটর শাহীন মাহমুদের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা ইস্টার্ন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যক্তিগত এবং ব্যাংক হিসাবে নথিপত্র তলব করে চিঠি দিয়েছে দুদক ভৈরবে চালের কুড়ার বস্তার আড়ালে রাখা ভারতীয় জিরা উদ্ধার গাজীপুরে স্ট্যান্ডার্ড ফিনিশ অয়েল কোম্পানি লিমিটেড কেমিক্যাল কারখানায় আগুন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘উৎস সন্ধ্যা ২০২৫’ দিনাজপুর-১ আসনের বিএনপি-র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩
  • ২৪৪ Time View

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩তম ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ বুধবার (১৭মে)। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নরঘাতকরা ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এসময় বিদেশে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী।

বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমনি ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতক গোষ্ঠী। খুনি সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রিয় স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন শেষে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা বাংলাদেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’; ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’।

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।

সেদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় আকাশে যখন শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায়, তখন সকল নিয়ন্ত্রণ আর অনুরোধ আবেদন অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকে যায়। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বিমানটি অবতরণ করে। জনতা একেবারেই বিমানের কাছে চলে যায়। বহু চেষ্টার পর জনতার স্রোতকে কিছুটা সরিয়ে ট্রাকটি ককপিটের দরজার একেবারে সামনে নেওয়া হয়। এই সময়ে শেখ হাসিনা ভেতর থেকে জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন।

বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এ সময় ঝড়বৃষ্টিতে নগর জীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন এখানে অপেক্ষা করে কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল, সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মধ্যেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিকেল সাড়ে ৩ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য দেবেন। সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

এদিকে, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচি রয়েছে। জোহরের নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সকাল ১১টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পবর্তা, মিরপুর-১০) খ্রিস্টান সম্প্রদায়, সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল ১০টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। তিনি গত চার দশকের বেশি সময় আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।’

দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।’

-বাসস

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS