আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। এই অঙ্গটি নানা ধরনের জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত। লিভার শরীর থেকে খারাপ পদার্থ বের করে দেয়, হজমে সাহায্য করাসহ হাজার কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাই লিভারের দিকে খেয়াল না রাখলে শরীর সহজেই অসুস্থ হয়ে যায়।
এদিকে আমাদের খারাপ জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস লিভারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সচেতন থাকাটা অবশ্যকর্তব্য। তবে কে শোনে কার কথা! তাইতো ফ্যাটি লিভারের মতো অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, লিভারে সামান্য ফ্যাট থাকে। তবে এই ফ্যাটের আধিক্য হলেই সমস্যা। সে ক্ষেত্রে লিভার ফাইব্রোসিস এবং সিরোসিসের মতো অসুখ দেহে বাসা বাঁধে। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্যাটি লিভার ডিজিজের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না বললেই চলে।
তবে শুধু ওষুধ খেয়ে এই অসুখের সঙ্গে লড়াই সম্ভব নয়। কয়েকটি ব্যায়ামের ওপর ভরসা রাখতে পারেন। তাতেই ধ্বংস হয়ে যাবে এই রোগ।
দিনে ২ মিনিট প্ল্যাঙ্ক–
এই ব্যায়ামটি করতে পারলে শরীরের কোর স্ট্রেন্থ বৃদ্ধি পায়। সহজে বললে, পুরো দেহেরই ব্যায়াম হয়, শক্তি
বাড়ে। এ ক্ষেত্রে উপুড় হয়ে শুরু পড়ুন। তারপর দুই হাত কনুই থেকে ভাঁজ করে শরীরের পাশে রাখুন। এ অবস্থায় হাতের বলে দেহকে ওপরের দিকে তুলুন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত একদম একই লাইনে থাকবে। এ অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড স্থির থাকুন। এভাবে ৩ থেকে ৪ সেট করুন। এতে পেটের চর্বি গলে যাবে। এমনকি কমবে ফ্যাটি লিভারের প্রকোপ। দ্রুত ফল পাবেন।
অ্যাবডোমিনাল ক্রাঞ্চেস–
এই ব্যায়াম করলে পেটের পেশি সুগঠিত হয়। ঠিকমতো অভ্যাস করলে সিক্স প্যাক অ্যাবসও পেতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুটি হাত মাথার পেছনে সাপোর্ট দিন। এ অবস্থায় পেটের বলে শরীরকে ওপর দিকে তুলুন। চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব মাথা হাঁটুর কাছে নিয়ে যাওয়ার। তারপর আবার আগের অবস্থায় ফেরত আসুন। এভাবে পরপর ১০ বার করুন। এই কৌশলে দিনে ৪টি সেট করতে পারলে উপকার পাবেন হাতেনাতে। কমবে লিভারে জমে থাকা ফ্যাট।
রেজিস্টেন্স ট্রেনিং ও ওয়েট লিফটিং–
ফ্যাটি লিভারকে দূরে সরিয়ে রাখতে হলে আপনাকে ওয়েট ট্রেনিং বা রেজিস্টেন্স ট্রেনিং করতে হবে। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে পুরো দেহ থেকে দ্রুতগতিতে মেদ ঝরে যায়। পেশি হয় সুগঠিত। তাই প্রতিনিয়ত এই ব্যায়াম করা জরুরি। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ওজন তুলবেন।
নিজের বুদ্ধিতে ব্যায়াম করতে গেলে বড় চোট লাগার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই একটু সচেতন হয়েই জিম করুন।
হাঁটাতেই মোক্ষলাভ–
হাঁটার থেকে সহজ কোনো ব্যায়াম এখনও আবিষ্কার হয়নি। ৮ থেকে ৮০ সবাই এই ব্যায়াম করতে পারেন। তবে হেলেদুলে হাঁটলে তেমন একটা লাভ পাবেন না। বরং আপনাকে ঘাম ঝরিয়ে হাঁটতে হবে। ঘাম ঝরলেই বুঝবেন লাভ হয়েছে। দিনে মাত্র ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন হেঁটে দেখুন, উপকার পাবেন। এর পরেরবার লিভার এনজাইম টেস্ট করলে ফলাফল স্বাভাবিক আসার সম্ভাবনা বাড়বে। তাই নিয়মিত হাঁটা চালু করুন। চাইলে জগিংও করতে পারেন।
সাইকেল চালানো, সাঁতারেও মন দিতে পারেন–
সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটাও কিন্তু এরোবিক এক্সারসাইজ। এই দুই ব্যায়াম নিয়মিত করলেও শরীর সুস্থ থাকে। এমনকি ঝরে মেদ। তাই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তরা নিয়মিত এই ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করার পাশাপাশি অবশ্যই তেল, মসলা, মিষ্টি, অ্যালকোহল খাওয়া ছাড়তে হবে। তবেই এই অসুখ থেকে মুক্তি নিশ্চিত।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS