রুশ তেলের ওপর পশ্চিমাদের মূল্যসীমা বেঁধে দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় আগামী মার্চ থেকে দৈনিক ৫ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এমন খবরে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনার হিড়িক পড়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের উৎপাদক রাশিয়া আগামী মার্চ থেকে দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে। তার আগেই ক্রেতারা দেশটির সমুদ্র পথে সরবরাহ করা অপরিশোধিত তেল কিনে মজুত করছে। এতে গত সপ্তাহে রুশ তেলের রফতানি বেড়েছে।
সপ্তাহ ব্যবধানে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে রাশিয়ার বাল্টিক, কৃষ্ণ সাগর, আর্কটিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় টার্মিনালগুলো থেকে রফতানি ২৬ শতাংশ বেড়েছে। যার পরিমাণ ২৫ দশমিক ২ মিলিয়ন টন। সেই হিসেবে দৈনিক ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ব্যারেল রুশ তেল বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়েছে।
এর মধ্যে বড় আকারের জ্বালানি তেলের চালান, যেগুলো আগে পাইপলাইনের মাধ্যমে পোল্যান্ড ও জার্মানিতে যেত, সেগুলো রাশিয়ার বিভিন্ন বন্দর থেকে ট্যাঙ্কারে করে ইউরোপে পাঠানো হয়েছে।
ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, যেসব দেশ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা মেনে নেয়নি, যেমন চীন, ভারত, তুরস্কে জ্বালানি তেলের রফতানি মাস ব্যবধানে দৈনিক ৩ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছেছে। এর মধ্যে যে কার্গোগুলো তাদের গন্তব্য প্রকাশ করেনি সেগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পর্যবেক্ষণ বলছে, বর্তমানে ‘আননোন এশিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত বেশিরভাগ কার্গোর গন্তব্যই ভারত। এগুলো দৈনিক ৬ লাখ ৩ হাজার ব্যারেল সমতুল্য জ্বালানি বহন করছে। আর ‘আদার আননোন’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ জাহাজগুলোর গন্তব্য হচ্ছে তুরস্ক। সেখানে দৈনিক ৮ লাখ ১৩ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
২৮ দিনে (১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) তুরস্ক বাদে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে সমুদ্রপথে সরবরাহ করা তেলের রফতানি ১ লাখ ২৫ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। এসব তেলের একমাত্র ইউরোপীয় গন্তব্য হচ্ছে বুলগেরিয়া। কারণ ২০২৪ সাল অবধি দেশটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে।
মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও তেলজাত পণ্যের দাম ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জি-সেভেন জোট। রুশ তেলের ওপর পশ্চিমাদের ওই মূল্যসীমা বেঁধে দেয়ার প্রতিক্রিয়াতেই এ সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে মস্কো। একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-সেভেন জোটের দেশগুলোর কাছে তেল বিক্রি বন্ধের কথাও জানায় ক্রেমলিন।
যার প্রতিক্রিয়ায় আগামী মার্চ থেকে দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তের কথা এই মাসের শুরুর দিকে জানিয়েছিল মস্কো। নতুন এই সিদ্ধান্তে রাশিয়ার তেল উৎপাদন কমে যাবে শতকরা ৫ শতাংশ।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply