সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ক্ষমা চাইলো ন্যাশনাল ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৫৯১ Time View

নানান সমস্যায় জর্জরিত শিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ব্যাংকটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অননুমোদিত লেনদেনের কারণে শাস্তির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেন এবং এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কার্ড ডিভিশনের প্রধান মো. মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত ক্ষমা প্রার্থনার চিঠিটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে।

এর আগে সিকদার পরিবারের সদস্যদের ১১টি ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে দেওয়া বৈদেশিক ঋণসুবিধার তথ্য গোপন করায় ন্যাশনাল ব্যাংককে জরিমানা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি কার্ডের জন্য ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডকে (এনবিএল) পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিলো। ফলে সব মিলিয়ে ব্যাংকটিকে জরিমানা গুনতে হয় ৫৫ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর ও চলতি মাসে কয়েক দফায় এসব জরিমানা করা হয়।

জরিমানা সংক্রান্ত প্রতিটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ‘গ্রাহকের ঋণের তথ্য ব্যুরোর (সিআইবি) ডেটাবেইসে রিপোর্ট না করার অভিযোগে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হলো। এ বিষয়ে আপনাদের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

ক্ষমা চেয়ে দেওয়া চিঠিতে ন্যাশনাল ব্যাংক জানায়, জেড এইচ শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজের নামে ১৯৯৯ সালে দিলকুশা শাখায় একটি বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব খোলা হয়। যা ২০১০ সালে পশ্চিম ধানমন্ডি শাখায় স্থানন্তর করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন লঙ্ঘন করে। তার জন্য ব্যাংকটি আন্তরিক দু:খ প্রকাশ করে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, উল্লেখিত দুটি শাখা দিয়ে সাধারণ গ্রাহকসহ বাংলাদেশে অধ্যয়নরত অনেক বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী এডি শাখা সুবিধা ভোগ করে। এই অবস্থায় যদি এই শাখা দুটির এডি লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করা হয়। তবে ব্যাংকের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।

এছাড়া, ব্যাংটির দুজন পরিচালকের নামে ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডগুলোর নিয়ম বহির্ভূত খরচের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। ভবিষ্যতে হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

যাদের ক্রেডিট কার্ডের জন্য জরিমানা করা হয়েছে, তাদের ১১ জনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ১১ জনের মধ্যে সিকদার পরিবারের সদস্য ৯ জন ও বাকি ২ জন সিকদার গ্রুপের কর্মকর্তা। তারা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিদেশে সীমাতিরিক্ত মার্কিন ডলার খরচ করেছেন, যা দেশের প্রচলিত আইনে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের অপরাধ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১১টি ক্রেডিট কার্ডে গত পাঁচ বছরে ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ৫২৮ ডলার খরচ করা হয়, প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৮৬ টাকা ধরে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১১৭ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিপত্রে দেখা গেছে, যে পরিমান ঋণের তথ্য গোপন করা হয়েছে তার মধ্যে রন হক সিকদারের ঋণ ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ৮৯৩ ডলার, রিক হক সিকদারের ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ডলার, দিপু হক সিকদারের ৪ লাখ ১১ হাজার ৮৮৬ ডলার, মমতাজুল হকের ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৫ ডলার ও লিসা ফাতেমা হকের ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬০৮ ডলার।

এছাড়া পরিববারের সদস্যদের মধ্যে জন হক সিকদারের ঋণ ১ লাখ ৩২ হাজার ৪৫০ ডলার, শোন হক সিকদারের ৯ লাখ ৮৭ হাজার ডলার। মনিকা সিকদার খানের ঋণ ৮২ হাজার ১৩৭ ডলার ও জেফরি সিকদারের ৫৭ হাজার ৪৪৫ ডলার। আর সিকদার গ্রুপের কর্মকর্তা সৈয়দ কামরুল ইসলামের ঋণ ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৮ ডলার ও গ্রুপের কর্মকর্তা ভারভারা জারিনার ঋণ ৭৪ হাজারে ৭৪৭ ডলার।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS