আলুর পুষ্টিগুণ শরীরের জন্য উপকারী।
খাওয়ার পদ্ধতি ও পরিমাপের ওপর নির্ভর করবে আলুর উপকারীতা।
আলুর সালাদ, মিষ্টি আলু ভাজা বা আলুর তৈরি অন্যান্য খাবার পছন্দ হলেও, এটা স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব রাখে তা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন হন।
তবে ‘জার্নাল অব নিউট্রিশনাল সায়েন্স’য়ে প্রকাশিত বোস্টন ইউনিভার্সিটির করা গবেষণায় দেখা গেছে, আলু আমাদের ধারণার চাইতেও বেশি স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
৩০ বছর ও তার ঊর্দ্ধে ২ হাজার ৫শ’ ২৩ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্য মূল্যায়ণ করে দেখা হয় যে, সুস্থ ও প্রাপ্ত য়স্কদের নিয়মিত আলু খাওয়া ‘কার্ডিওমেটাবলিক’ স্বাস্থ্যের ওপর কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
যা হয়েছিল গবেষণায়
যদিও এই বছর সেপ্টেম্বরে গবেষণার ফল প্রকাশ পায়। তবে গবেষকরা এতে ৭০ শতাংশ তথ্য ১৯৭১ সালে থেকে সংগ্রহ করা শুরু করেন। আর বাকিগুলো এর পরবর্তি সময়ে সংগ্রহ করা হয়।
আগের তথ্যে অংশগ্রহণকারীরা কোন ধরনের আলু খেয়েছিল অর্থাৎ সাদা না মিষ্টি আলু তা নিয়ে গবেষণা করা হয়।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ বেইকড আলু, ২৮ শতাংশ ভাজা, ১৪ শতাংশ ভর্তা এবং ৯ শতাংশ সিদ্ধ আলু খেত। আর এর ভিত্তিতে অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্য পর্যালোচনা করা হয়।
গবেষণার ফলাফল
এই গবেষণার ফলাফলে সূত্র ধরে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়- সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সপ্তাহে চার কাপ বা তার বেশি সাদা অথবা মিষ্টি আলু ভাজা বা অন্য রেসিপিতে খাওয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্য ঝুঁকি, হাইপারটেনশন ও ‘ডিস্লিপিডিমিয়া’র বা ‘এইচডিএল’ ও ‘এলডিএল’ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড ভাসাম্যহীনতার কোনো সম্পর্ক নেই।
এছাড়াও, যে সকল অংশগহণকারী ভাজা আলু খান এবং রেড মিট এড়িয়ে চলেন তারা তুলনামূলক কম স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকেন। এদের মধ্যে টাইপ-টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ২৬ শতাংশ এবং ট্রাইগ্লিসারাইড বৃদ্ধির সম্ভাবনা ২৬ শতাংশ কম থাকে।
গবেষণার প্রভাব
‘ফ্লেক্সিটারিয়ান ডায়েট’ বইয়ের লেখক মার্কিন পুষ্টিবিদ ডন জ্যাকসন ব্লটনার ইটদিস নটদ্যাট ডটকমকে বলেন, “আলু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, উচ্চ রক্তচাপ বা ট্রাইগ্লিসারাইড বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। কারণ আলু অপ্রক্রিয়াজাত খাবার।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “আলু উন্নতমানের কার্বোহাইড্রেইট ও আঁশ সমৃদ্ধ সবজি। মাঝারি মাপের আলু পটাশিয়ামের ভালো উৎস যা পেশিতে ইলেক্ট্রোলাইটের যোগান দেয়। আর কার্ডিওভাস্কুলার ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রমে সহায়তা করে।”
এতে আছে ভিটামিস সি, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। আর তা সেলুলার ক্ষয় প্রতিকারে সহায়তা করে।
ব্লাটনার জানান, এটি এমন একটা খাদ্য দলের অন্তর্ভুক্ত যা ৯০ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত পান না।
‘দ্যা ইউএস ডায়টেরি গাইডলাইন’ দৈনিক ২.৫ কাপ সবজি ও সপ্তাহে পাঁচ কাপ শ্বেতসার খাওয়ার পরামর্শ দেয়।
তবে এর সঙ্গে কী খাওয়া হচ্ছে তার দিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন ব্লাটনার।
“সুষম খাবারের সঙ্গে আলু খাওয়া উপকারী। তবে স্টেক বা বার্গারের সঙ্গে আলু খাওয়া ঠিক নয়। ক্লাসিক বেইকড আলুর ওপরে বাটার, পনির বা টক ক্রিম দিয়ে পরিবেশন করা খাবার পরিমিত মাপে খাওয়া উচিত। পাশপাশি থাকতে হবে অন্যান্য পুষ্টিকর উপকরণ যেমন- সবজি, বিন-চিলি, কাঁচা পেঁয়াজ ইত্যাদি।
আরও স্বাস্থ্যকর উপায়ে খেতে চাইলে আলু এয়ার ফ্রায়ারে ভেজে খাওয়ার পরামর্শ দেন দেন, তিনি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply