বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠন স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২
  • ১৯৯ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি (ছবি) হাসুঃ

দাবিসমূহঃ

১. এক আবেদনে নিবন্ধনধারী চাকরি প্রত্যাশীদের কোটা বিহীন প্যানেলে নিয়োগ দিতে হবে।

২. চাকরি প্রত্যাশীদের স্ব স্ব নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে।

৩. ইনডেক্সধারীদের প্যানেলের অন্তর্ভূক্ত না করে, আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন ব্যতিত কোনো ব্যক্তি কোনো পদে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের যোগ্য বিবেচিত হবে না। এরই বাস্তবায়নে প্রতি বছর অক্টোবর মাসে উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্ট থানাধীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদ ও বিষয় ভিত্তিক পদ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করবেন এবং জেলা শিক্ষা অফিসার উক্ত তালিকার সঠিকতা যাচাই করে নভেম্বর মাসের মধ্যে এনটিআরসিএ’র অনুকূলে পাঠাবেন। এনটিআরসিএ উক্ত তালিকার ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণ করবে। এভাবেই চলছিল এনটিআরসিএ’র বাৎসরিক পরীক্ষা গ্রহণ। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সনদ পেলেও সনদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। ২০১৩ সালের ২০ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে হাই কোর্টের রায়ে ১-১২তমদের সনদের মেয়াদ পাঁচ বছর বাক্যটি বিলুপ্ত করে সনদের মেয়াদ আজীবন করা হয়। ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ে পাশ হয় নতুন গেজেট। ২০০৬ সালে প্রকাশিত গেজেটের আলোকে পূর্ব নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিয়োগের কোনো সুরাহা না করে এককভাবে প্রার্থী নির্বাচন করে শূন্য পদে নিয়োগ সুপারিশের উদ্দেশ্যে ১৩তমদের পরীক্ষা নেয় এনটিআরসিএ। সরকারি কোনো আইন বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে পুনর্বাসন করা সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ক্ষতিগ্রস্থ ও নিয়োগ বঞ্চিত ১-১২তমদের কিছু অংশ আদালতের দারস্ত হন। এতে আটকে যায় ১৩তমদের নিয়োগ সুপারিশের কার্যক্রম। এনটিআরসিএ ও শিক্ষামন্ত্রণালয় এর মাঝে সমন্বয়হীনতা আধুনিক সময়োপযোগী একটি শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিকে জটিল থেকে জটিল করে তুলেছে। ১৩তম, ১৪৩ম, ১৫ তমসহ নতুন ১৬তমদের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হতে যাচ্ছে একই জটিলতা। এদের ক্ষেত্রে আছে আবার বয়সের বেড়াজাল। হঠাৎ একদিন হয়তো শুনা যাবে আইনি জটিলতার কারণে এদেরকে আর নিয়োগ সুপারিশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুতরাং যা হচ্ছে সবই পরিকল্পনাহীন ও সমন্বয়হীনতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়। এনটিআরসিএ’র দ্বিমুখী নীতির কারণে কেউ ৪০ নম্বর পেয়ে চাকরি করছে, কেউ ব্লক পোস্ট পেয়ে চাকরিতে যোগদান করছে, আবার অবৈধ সনদ দিয়েও চাকরি করছে। অথচ বৈধ্য সনদধারীরা অযোগ্য হচ্ছে। এক সময়ের টপলেভেল মার্কধারীরা প্রেক্ষাপট বিবেচনা না করায় তলানিতে পড়ে যাচ্ছে। এনটিআরসিএ এদেরকেই একদিকে অযোগ্য বলছে আর অন্যদিকে নিয়োগ সুপারিশের প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার আবেদনের বিপরীতে সর্বশান্ত করে তুলছে।

যেখানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন মানের প্রশ্নপত্রে ভিন্ন ভিন্ন পাশের হারের নিবন্ধিতদের একত্রিত করা হচ্ছে, সেখানে কেউ কম মেধাবী, কেউ বেশি মেধাবী বলাটাও কতটা যৌক্তিক মহামান্য আদালতই ভালো জানেন। এনটিআরসিএ ইনডেক্সধারীদের এমপিও হওয়ার পর সনদ রহিত করণে পরিবর্তে বার বার প্রতিষ্ঠান বদল করা সুযোগ দিচ্ছে। এতে তাদের গণবিজ্ঞপ্তি নামক ব্যবসা দিনকে দিন জমে ওঠছে। একদিকে যেমন শিক্ষক সংকট তৈরি হচ্ছে, অন্যেিদক সদ্য উত্তীর্ণরা চাকরির আশায় গণবিজ্ঞপ্তির জন্য লাফাচ্ছে। এনটিআরসিএ এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ইনডেক্সধারীদেরসহ সবাইকে যুদ্ধক্ষেত্রে নামিয়ে দিচ্ছে। ইনডেক্সধারীদের সনদ রহিত করণে হাইকোটে রায় থাকা সত্ত্বেও এনটিআরসিএ দায়িত্ব নিয়ে এদেরকেই গণবিজ্ঞপ্তির অন্তরালে বদলি ব্যবস্থার মহান কাজটি করে যাচ্ছে। যেখানে পদের সংখ্যা যাই হোক সকল নিবন্ধনধারী আবেদন করবে যত খুশি তত, কিন্তু চাকরি নামক সোনার হরিণ ধরা দিবে ইনডেক্সধারীদের কাছে। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৫ হাজার পদে আবেদনকারীর তালিকা প্রকাশ না করে কার স্বার্থে, কি কারণে ঐ ১৫ হাজার পদের বিপরীতে আবার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নামক

লটারি আয়োজনের অনুমতি এনটিআরসিএ’র পায় কে জানে? কেন ১৫ হাজার পদের বিপরীতে কোনো যোগ্য শিক্ষক খুঁজে পাওয়া গেল না? এর মানে সবাই আবেদন যোগ্য হলেও নিয়োগ যোগ্য নয়, এমনটি নয় কী? তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ৫৪ হাজার ৩০৭ টি পদের বিপরীতে ১৪ হাজারেরও কম (ইনডেক্সধারী ব্যতীত) নিয়োগ সুপারিশ করতে যাচ্ছে এনটিআরসিএ। ১৬তম নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলো ১৮ হাজারেরও অধিক। বছরে ২০/৩০ হাজার যোগ হবে আর বার বার পূর্বের নিয়োগ প্রাপ্ত (প্রায় ৮৬ হাজার) ইনডেক্সধারীরা সুপারিশ পাবে। এভাবে চলতে থাকলে শুধু ১-১২তম নয়, ১৩ তম, ১৪ তম, ১৫ তম ও ১৬তম একটি অংশেরও কোনো দিন চাকরি হবে না।

কারো স্কুল পর্যায়ে নিবন্ধন সনদ আছে, কারো কলেজ পর্যায়ে সনদ আছে, কারো কারো উভয়টি আছে। অনেকের তিনটি, চারটি এমনটি পাঁচটি পর্যন্ত সনদ আছে। কারো তো একাধিক পদে চাকরির সুযোগ নেই। শিক্ষক নিবন্ধন সনদ চাকরির সনদ, একাডেমিক সনদ নয়। শিক্ষকতা ছাড়া এ সনদ কোনো কাজে আসবে না। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতার সনদ- শিক্ষক নিবন্ধন সনদ। তাই সনদ যার, চাকরি তার। মুখস্ত নিবন্ধনধারীর সংখ্যা না বলে- এ যাবত (কমিটি বা এনটিআরসিএ-এর হাতে) নিয়োগ প্রাপ্ত ইনডেক্সধারী, মৃত ব্যক্তি, সরকারি চাকরি জীবি, ব্যবসায়ী বা বিদেশগমনকারী যারা চাকরি প্রত্যাশী নয় এদের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহৃত করে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি থেকেই প্রকৃত চাকরি প্রত্যাশী সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব। কেউ জমি বিক্রি, কেউ গহনা বন্ধ রেখে, কেউ ঋণ তুলে এনটিআরসিএ’র এ শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ নামক লটারির টিকেট কিনেন। একই চাকরির জন্য একই কর্তৃপক্ষের অধীনে হাজার হাজার আবেদন করতে হয়, এমন নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। যেখানে চাকরির আশায় একক জন ব্যক্তি ১২০০, ১৩০০ আবেদন করেও চাকরি নিশ্চিত করতে পারে না। একেক জন গড়ে ১০০ টিরও বেশি আবেদন করেছে। এ হিসেবে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় নব্বই হাজার। হয়তো আরও কম হবে কারণ এ হিসেবটা ইনডেক্সধারীসহ। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক শূন্যতায় ভুগছে।

সর্বশেষ তথ্যমতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮৫ হাজার পদ এখনও খালি। এবার ৫৪ হাজার ৩০৭ টি পদ থেকে আবার খালি থাকছে প্রায় ৪০ হাজার। ১-১৬তম সকল নিবন্ধধারী যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে সনদ অর্জন করেছে। সুতরাং সরকারের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে এবং কৃত্রিম শিক্ষক সংকট দূরীকরণে এখন প্যানেল ভিত্তিক নিয়োগের বিকল্প নেই। কৃত্রিম শিক্ষক সংকট দূরীকরণে চাকরি প্রত্যাশী নিবন্ধধারীরদের এক আবেদনে ইনডেক্সধারীদের অন্তর্ভূক্ত না করে কোটা বিহীন স্বস্ব নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রেখে প্যানেল ভিত্তিক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সদিচ্ছা এবং সুনজরের অপেক্ষা মাত্র।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS