বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:২৫ অপরাহ্ন

পুনঃতফসিল ঋণের ৩৮ শতাংশ ফের খেলাপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫

খেলাপি ঋণ কম দেখাতে দেশের ব্যাংকগুলো ঝুঁকছে পুনঃতফসিলের দিকে। এখন চাইলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারে। সমাপ্ত ২০২৪ সালেই ব্যাংক খাতে ৮৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিশেষ সুবিধা নিয়ে খেলাপিরা নবায়ন করেছেন। ওই বছর পর্যন্ত নবায়ন করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে পুনরায় এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছে। অর্থাৎ নবায়ন করা ঋণের মধ্যে পুনরায় খেলাপি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ ঋণ। নবায়ন করা ঋণ পুনরায় খেলাপি হওয়ার ক্ষেত্রে এটিই সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ঋণ পুনঃতফসিল হচ্ছে, কোনো একটি ঋণ পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমাকে এগিয়ে নিয়ে আসা বা পিছিয়ে দেওয়া, অর্থাৎ বাড়িয়ে দেওয়া। তবে, বাংলাদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেই পুনঃতফসিল বা নবায়ন করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছর ব্যাংক খাতে মোট ৮৬ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এ ঋণসহ নবায়ন করা মোট ঋণের স্থিতি গত বছর শেষে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত বছর পর্যন্ত পুনরায় খেলাপি হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ। যে কারণে বিশেষ ছাড়ে নবায়ন করেই খেলাপি ঋণ কমানো যাচ্ছে না। বাকি ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার নবায়ন করা ঋণ এখনও নিয়মিত হিসাবে রয়ে গেছে। অর্থাৎ নবায়ন করা ঋণের মধ্যে পুনরায় খেলাপি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ ঋণ। নিয়মিত হিসাবে রয়েছে ৬১ দশমিক ৫৮ শতাংশ ঋণ।

নবায়ন করা ঋণের মধ্যে গত বছরই সবচেয়ে বেশি খেলাপি হয়েছে। ২০২৩ সালে এ ঋণের স্থিতি ছিল ৫৪ হাজার ৬০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে অর্ধেকের বেশি নবায়ন করা ঋণ গত বছরে খেলাপি হয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ব্যাংক খাতে লুটপাটের চিত্র প্রকাশ হচ্ছে। ওই সময়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের ঋণ বিশেষ ছাড়ে নবায়ন করা হয়েছিল। সেগুলোর কিস্তি পরিশোধ না করলেও ব্যাংক তা খেলাপি করেনি। নিয়মিত হিসাবেই রেখে দিয়েছিল। সরকার পতনের পর তা খেলাপি করা হয়েছে। যে কারণে নবায়ন করা ঋণ গত বছর বেশি খেলাপি হয়েছে।

তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের প্রবণতা বেড়েছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতি ও মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। মূলধন ঘাটতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এতে ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। খেলাপি ঋণের অর্ধেকেরও বেশি রয়েছে শীর্ষ ৫টি ব্যাংকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS