মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন

ডিজি ছাড়াই চলছে শিল্পকলা একাডেমি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫

জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদ গত প্রায় দেড় মাস ধরে শূন্য রয়েছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সংস্থাটির মুখ্য অভিভাবক না থাকায় সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রে ঝিমিয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তারা বলছেন, সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি অনেক বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন চাঙ্গা ও আরও গতিশীল করতে শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করা দরকার।

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রায় মাস খানেক পর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব নিয়েছিলেন নাট্যনির্দেশক ও গবেষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। প্রায় ছয় মাস দায়িত্ব পালনের পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সেদিন সন্ধ্যায় একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতার এক পর্যায়ে দেওয়া পদত্যাগের ঘোষণায় তিনি একাডেমির কাজে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন। সেই সঙ্গে বক্তৃতার মঞ্চেই একাডেমির সচিবের কাছে তার পদত্যাগপত্র হস্তান্তর করেন। এরপর পদত্যাগের কারণ উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমে লিখিত বক্তব্যে দেন।

গত ৪ মার্চ সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুল মোক্তাদেরের স্বাক্ষর করা এক পত্রে শিল্পকলার সচিবকে মহাপরিচালকের কার্যভার অর্পণ করা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী এরপর থেকে শিল্পকলার সচিব তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মহাপরিচালকের পদ শূন্য থাকা অবস্থাতেই নানামুখী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেরও আয়োজন করা হচ্ছে। তবে সাংস্কৃতিক কর্মী ও সংগঠকরা বলছেন, শিল্পকলায় প্রধান অভিভাবক না থাকায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের গতি কমেছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যক্রমও আগের মতো গতি পাচ্ছে না।

তবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ইত্তেফাককে বললেন, শিল্পকলা একাডেমি মোটেও অভিভাবকহীন নয়। অভিভাবকহীন হলে শিল্পকলা এতগুলো অনুষ্ঠান করতে পারত না। আমার ধারণা, শিল্পকলার ইতিহাসে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ নিয়ে এত বড় স্কেলের, এত বেশি অনুষ্ঠান শিল্পকলা এর আগে করেনি। শুধু অনুষ্ঠান নয়, এর পেছনে থটফুলনেস যদি দেখেন তাহলে দেখবেন যে দিস আর ভেরি ইনোভেটিভ।  সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা আরো বলেন, শিল্পকলায় যারা কাজ করছেন তারা যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছেন। অভিভাবকহীন শিল্পকলা এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে পারে না।  নতুন মহাপরিচালক কবে পাচ্ছে শিল্পকলা—এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এটা সময় হলে আমরা দেখব, কখন করা যাবে।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠকরা বলছেন, মহাপরিচালক ও সংস্কৃতি উপদেষ্টার মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে সৈয়দ জামিল আহমেদ তার পদ ছেড়ে চলে গেছেন। তবে যোগ্য অভিভাবক পেলে আবারও দারুণভাবে সক্রিয় হয়ে উঠবে গোটা অঙ্গন। জানতে চাইলে নাট্যজন মাসুম রেজা ইত্তেফাককে বলেন, সবসময়ই শিল্পকলায় একজন মহাপরিচালক থাকা প্রয়োজন। কারণ সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড মহাপরিচালক দ্বারাই পরিচালিত হয়। অথচ প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেল শিল্পকলা একাডেমি অভিভাবক শূন্য।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS