সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন

ফের অস্থির আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল, বিভিন্ন কারখানায় ছুটি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

মিক অসন্তোষে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। সরকার ঘোষিত বার্ষিক ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রত্যাহারসহ নতুন আরও কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে আজও কর্মবিরতি পালন করেছেন আশুলিয়ার বড় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ছয়টি কারখানা এবং আরও ছয়টিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া।

বেতন বৃদ্ধিসহ ১৮ দফা দাবিতে টানা দুই মাসের অচলাবস্থার পর শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার পর পোশাক খাতে হঠাৎ করে অস্থিরতার পেছনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন এবং চক্রান্ত দেখছেন মালিকপক্ষ।

তবে শ্রমিকরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় চলতি বেতনে জীবনযাত্রা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই বার্ষিক বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি, অর্জিত ছুটির টাকা প্রতি মাসে পরিশোধ, নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান ও জল কামান।

শিল্প পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে কাজে যোগ দিয়েও অন্তত ২৫টি কারখানার শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখে শুরু করেন কর্ম বিরতি। হাজিরা নিশ্চিত করে বিভিন্ন কারখানায় ১ থেকে ২ ঘণ্টা অবস্থান করে তারা বেরিয়ে যান। এমন পরিস্থিতিতে নরসিংহপুর এলাকায় আল-মুসলিম, নাসা, নিউ এইজ, ডেকোসহ ১৩টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এছাড়াও চলমান অস্থিরতার কারণে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় ট্রাউজার লাইন নাসা গ্রুপের একাধিক কারখানাসহ ছয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী ‘নো ওয়ার্ক নো পে’বা—‘কাজ নেই, মজুরি নেই’নিয়মে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা কোন বেতন পাবেন না।

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা। তাই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কোনও অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে নতুন করে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে তাদের অধিকাংশের মালিক পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ঘনিষ্ঠ। শেখ হাসিনার দেশ‌ থেকে পলায়নের পর মালিকদের অনেকেই দেশের বাইরে আত্মগোপনে রয়েছেন‌।

অস্থিরতা সৃষ্টির নেপথ্যে দেশি-বিদেশি ইন্ধনকেই দুষছেন তারা।

তৈরি পোশাকের নিট ক্যাট্যাগরির পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সব খাতে বাড়তি ব্যয়ের কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে হঠাৎ অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পরিশোধের সক্ষমতা অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষেরই নেই। তারপরও উৎপাদনমুখী পরিবেশের স্বার্থে কারখানা মালিকেরা ত্রিপক্ষীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। তা সত্ত্বেও শ্রমিকরা আরও দাবি করছেন।

একটি দাবি পূরণ করার পর নতুন দাবি সামনে নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। এগুলো শিল্প ধ্বংসের আলামত। এতে কারখানা মালিকেরা যেমন বিপদে পড়বেন, তেমনি শ্রমিকরাও বেকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS