রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২:৩২ অপরাহ্ন

ইতিহাসের ভয়াবহতম বন্যায় স্পেনে ২ শতাধিক মানুষের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪

স্পেনের পূর্বাঞ্চল ভ্যালেন্সিয়ায় বন্যায় অন্তত ২১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ৷ ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যার চারদিন অতিবাহিত হয়েছে৷ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে৷

টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে সানচেজ জানিয়েছেন, নিখোঁজদের সন্ধানে বন্যা কবলিত এলাকায় নতুন করে পাঁচ হাজার সেনা সদস্য পাঠানো হয়েছে৷ পরিষ্কারের জন্য আড়াই হাজার সেনা নিযুক্ত আছে৷ শান্তিকালীন সময়ে এটি স্পেনের সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অভিযান৷ সরকার যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ সব কিছুর ব্যবস্থা করে যাবে৷

মৃত্যুর দিক থেকে ১৯৬৭ সালের পর এটি ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ঘটনা৷ সে বছর বন্যায় পর্তুগালে অন্তত ৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এদিকে উদ্ধারকারীরা এখনও বন্যাকবলিত এলাকা থেকে জীবিত মানুষদের উদ্ধারে আশাবাদী৷ ভ্যালেন্সিয়ার মন্টকাডাতে একটি গাড়ির পার্কে তিন দিন আটকে থাকার পর এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করেছেন তারা৷ নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান মার্টিন পেরেৎজ এই তথ্য জানানোর পর বাসিন্দারা হাত তালি দিচ্ছিলেন৷

এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকার বাড়িঘরগুলো কাদায় ঢেকে গেছে৷ রাস্তায় স্তুপ হয়ে আছে আসবাবপত্র৷ কাদা-মাটি সরানো এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

ভ্যালেন্সিয়ার শহরতলি পিকানিয়ার বাসিন্দা ৭৪ বছর বয়সি এমিলিয়া এ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন৷ তিনি বলেন, আমরা অ৷সহায় বোধ করছি৷ এখানে অনেকের সহযোগিতা প্রয়োজন৷ শুধু আমার বাড়িতে নয় সব বাড়ি থেকেই আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সব ফেলে দিতে হচ্ছে৷ আমরা এমনকি আমাদের পোশাক ধুতে পারছি না, স্নান করতে পারছি না৷

আরেক বাসিন্দা মারিয়া হোসে গিলাবার্ট বলেন, ‘আমরা বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি, কারণ কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না৷ সেটা এইজন্য না যে, কেউ আসছে না সহায়তার জন্য৷ বরং স্পেনের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ সহায়তার জন্য আসছেন৷ কিন্তু কবে এই এলাকা আবার বসবাসের উপযুক্ত হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত৷’

ইউরোপাপ্রেস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে ভ্যালেন্সিয়ার শহর থেকে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছে৷

প্রধানমন্ত্রী সানচেজ জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় নিয়োজিত ১০ হাজার বাড়তি পুলিশ ও সেনাসদস্য নিয়োগ দেয়ার কারণে উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতার কাজে গতি আসবে৷

এদিকে আগামী দুইদিনও বালেয়ারিক দ্বীপপুঞ্জ, কাতালোনিয়না ও ভ্যালেন্সিয়ায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইউরোপে ঘনঘন চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো দেখা দিচ্ছে৷ ভূমধ্যসাগর উষ্ণ হয়ে ওঠায় আগের চেয়ে বেশি সামুদ্রিক জল বাষ্পীভূত হচ্ছে৷ এতে ভারি বর্ষণের পরিমাণ বাড়ছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, ডিপিএ

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS