মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তালিকা নেওয়ার পরামর্শ আইএমএফের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তালিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।

মূলত দুর্নীতি কমাতেই প্রতিবছর তাদের সম্পদের তালিকা নেওয়া এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করতেই এই পরামর্শ দেওয়া হয় সরকারকে।

বাংলাদেশকে দেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন করে মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমএফ এর ‘স্টাফ রিপোর্ট’ এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর থেকে প্রত্যাহারকৃত সদস্য মতিউর রহমানের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ার পর সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এর পরপরই এমন পরামর্শ দিল আইএমএফ।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরাও জাতীয় সংসদে সরকারি চাকরিজীবীদের দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

আইএমএফ বলেছে, উঁচু-স্তরের দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে, এ বিষয়ে অসম্মতি (নন-কমপ্লায়েন্স) দেখা দিলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ নিয়মিত হালনাগাদের জন্য একটি মানসম্মত পন্থা অবলম্বন করে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ ঘোষণার প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির ক্ষেত্রে সুশাসনের উন্নয়ন এবং দুর্নীতি রোধ ব্যাপক অবদান রাখবে। রাজস্ব ও আর্থিক সুশাসনের উন্নতি, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং নীতি কাঠামো শক্তিশালীকরণও উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। তবে চার দশকের বেশি সময় ধরে নিয়মটি পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি।

অতীতে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের অধীনে কর্মচারীদের কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়েও তেমন সাড়া পায়নি।

সরকারি কর্মচারী আইন (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ১২ ও ১৩ অনুসারে সরকারি কর্মচারীর স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রি ও সম্পদ বিবরণী জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি, জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটসহ যে কোনো সম্পদ কিনতে বা বিক্রি করতেও সরকারের অনুমতি নিতে হয় তাদের। সম্পদ কেনার ক্ষেত্রে টাকার উৎস সম্পর্কেও জানাতে হয়। আবার সম্পদ বিক্রি করা হলে দাম জানাতে হয়। কারণ, কমবেশি দামে সম্পদ বেচাকেনা হলো কি–না, তা যাচাই করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হলে সে সময় সব কর্মচারীই তা দিয়েছিলেন। নানান দিকে আলোচনা উঠলে ২০১৫ সালে আরেক দফা সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলে সরকার। তখন গুটিকয়েক মন্ত্রণালয় তাদের নিয়ন্ত্রিত কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিতে পারলেও বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS