নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আজ ৭ নভেম্বর ২০২৩ ইং, বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ, ভূমি আন্দোলনের পথিকৃৎ, গণবুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রখ্যাত কৃষক নেতা কমরেড আবদুস সাত্তার খানের ২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী।
পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলা মরহুমের নিজ গ্রামের বাড়ি সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ,বাদ জোহর নামাজ দোয়া ও সাধারণ খান অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ১০টায় দশমিনা সদর উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে দেশের ” ভূমি,খাদ্য সার্বভৌমত্ব ও জলবায়ু” শীর্ষক আলোচনা সভা বাংলাদেশ কিষাণী সভা সভানেত্রী, দশমিনা উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ সামসুন্নাহার খান ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদ সদস্য, পটুয়াখালী-৩ আসন এর মাননীয় সাংসদ এস এম শাহজাদা এমপি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জনাব মোঃ আবদুল আজীজ, চেয়ারম্যান, দশমিনা উপজেলা পরিষদ, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড বদরুল আলম, সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জনাব এ্যাড. ইকবাল মাহামুদ লিটন, চেয়ারম্যান, দশমিনা ইউনিয়ন পরিষদ ও সাধারণ সম্পাদক দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ, জনাব গাজী মোঃ মিজানুর রহমান মিজান, সদস্য, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ, ডাহ ডলি আকবর মহিলা কলেজের অধক্ষ্য মোঃ সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, চর বোরহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব নজির আহম্মেদ সর্দার প্রধান বক্তা কৃষক নেতা জায়েদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার হাওলাদার,পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কায়েস মাহমুদ, দশমিনা উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ নয়া মিয়া সিকদার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শ্রমিক, কৃষক, যুব,ছাত্র, সাংবাদিক, আইনজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী ডাক্তার ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে কৃষির গুরুত্ব আমাদের কাছে অপরিসীম। কৃষিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। করোনা কালীন সময় হতে কৃষি উৎপাদন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কৃষিকে অবহেলা করার সু্যোগ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য; বিগত দশকের পর দশক আমাদের কৃষি ও কৃষককে নানাভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। জাতীয় বাজেটে কৃষি ও কৃষকের জন্য বরাদ্দ থাকে সব সময় ক্ষীণ। কৃষক কঠিন শ্রম দিয়ে অধিক উৎপাদন করে মানুষের চাহিদা মিটালেও সে কিন্তু নিজে লাভবান হচ্ছে না। তার পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কম দামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করে কৃষককে বঞ্চিত করে। ফলে কৃষক তার পুনঃউপাদনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে কৃষি ক্ষেত্র হতে উচ্ছেদের শিকার হয়। ক্ষেত্র বিশেষ ভুমিহীনে পরিণত হয়।

বর্তমান বিশ্বে কৃষকের কৃষির গুরত্ব ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কৃষকের কৃষি তথা ক্ষুদ্র কৃষক জলবায়ু পরিবর্তনে কোন ভূমিকা রাখে না। বরং পরিবেশ ও প্রতিবেশ বা সামগ্রিকভাবে পৃথিবীকে শীতল করে। কৃষিকে আরও বেশি টেকসই করে তোলার জন্য এগ্রোইকোলজিক্যাল চাষা্বাদের ধরন প্রবর্তন করতে হবে। যার কেন্দ্রে থাকবে কৃষক। কমরেড আবদুস সাত্তার খান রাসায়নিক সার ও কীটনাশক নির্ভর কৃষি ব্যবস্থার বিরোধীতা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশ বান্ধব তথা এগ্রোইকোলজিক্যাল চাষাবাদের সপক্ষে কথা বলতেন।
কৃষির সাথে ভুমির ওতোপ্রোত সম্পর্ক। ভুমি কৃষির নিশ্চয়তা দেয়। বস্তুতঃ ভুমিই হচ্ছে মানুষের জীবন- জীবীকার প্রাথমিক উৎস। তাই বিশ্বব্যাপী নানা উপায়ে ভুমি দখল করার পাঁয়তারা চলছে। জলাভুমি দখলও ভুমি দখলের নামান্তর। এ দখলদারিত্বে বহুজাতিক কৃষি ব্যবসায়ী কর্পোরেশন এগিয়ে আছে। কৃষক হিসাবে পরিচয় লাভে ভুমির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ভুমিবিহীন কৃষক কোন অর্থ বহন করে না। তাই কৃষকের ভুমি অকৃষি কাজে ব্যবহার অনুচিতi কাজ। বাংলাদেশে কৃষি জমির পরিমাণ প্রতিবছর ১% করে কমে যাচ্ছে। এটা আশংকাজনক। ভূমির গুরুত্ব অনুধাবন করতেন কমরেড সাত্তার খান।

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply