সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৫০ Time View

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ভোরে ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগরসহ উপকূলীয় বালি ও লম্বক অঞ্চলে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে।

ইউরোপিয়ান-মেডিটেরিনিয়ান সিমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইএমএসসি) বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে ইন্দোনেশিয়ার বালি এবং লম্বক দ্বীপপুঞ্জের উত্তরে সমুদ্রের গভীরে ৭.০ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর সেখানকার বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

ইএমএসসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ইন্দোনেশিয়ার মাতারাম থেকে ২০৩ কিলোমিটার (১২৬ মাইল) উত্তরে এবং ভূপৃষ্ঠের ৫১৬ কিলোমিটার নীচে খুব গভীরে।

ইন্দোনেশিয়া এবং মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থাগুলো অবশ্য মঙ্গলবার ভোরে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১ ছিল বলে জানিয়েছে। এই ঘটনায় কোনোও ধরনের সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়নি।

ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক সংস্থা অনুসারে, বালি এবং লম্বকের উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পটি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ৪ টার আগে অনুভূত হয়। এরপরে ৬.১ এবং ৬.৫ মাত্রার আরও দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় ওই অঞ্চলে।

বালির মারকিউর কুটা বালি নামক এটি হোটেলের ম্যানেজার সুয়াদি ফোনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কয়েক সেকেন্ডের জন্য কম্পন অনুভব করার পরে হোটেলের অতিথিরা তাদের ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের অনেকে আবার ফিরে আসেন এবং এতে বিল্ডিংয়ের কোনও ক্ষতি হয়নি।

তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু অতিথি তাদের কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন এবং তারা এখনও হোটেল এলাকায় অবস্থান করছেন।’

এদিকে ভূমিকম্পের জেরে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি বলে ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ সংস্থা বিএনপিবি জানিয়েছে। বিএনপিবি’র মুখপাত্র আব্দুল মুহারী বলেন, ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠের অনেক গভীরে আঘাত হেনেছে, তাই এটি হয়তো ধ্বংসাত্মক হয়নি।

উল্লেখ্য, এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপদেশ ইন্দোনেশিয়ার জন্যসংখ্যা সাড়ে ২৭ কোটির বেশি। ভূতাত্ত্বিক অবস্থার কারণে নিয়মিতই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে ভূমিকম্প, অগ্নুৎপাত ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে থাকে।

এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে প্রাথমিকভাবে ৫৬ জনের প্রাণহানির তথ্য জানানো হয়। পরে এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১০ জনে। আহত হয়েছিলেন আরও বহু মানুষ।

এছাড়া ২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হন আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়।

তারও আগে ২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।

মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS