পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার শুনানিতে অংশ নেয়ার সময় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে পিটিআই চেয়ারম্যানকে হেফাজতে নেয় পাক রেঞ্জার্স।
শুধুমাত্র আল-কাদির ট্রাস্ট মামলা নয়, ইমরান খানের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও ৮৫টি মামলা। গত বছর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়। এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন।
৭০ বছর বয়সি পাকিস্তানের এই বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়কের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, আদালত অবমাননা, দাঙ্গা এমনকি ধর্ম অবমাননারও মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশরা বিবি এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জুলফিকার বুখারি এবং বাবর আওয়ান আল-কাদির ইউনিভার্সিটি প্রজেক্ট ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন। এই ট্রাস্ট পাঞ্জাবের ঝিলম জেলার তহসিল সোহাওয়াতে মানসম্মত শিক্ষা দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতীয় কোষাগার থেকে এই ট্রাস্টের নামে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে।
এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে আল-কাদির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সোহাওয়া মৌজার বিশাল জমি ‘দখলে’ নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ইমরান খানের গ্রেফফতারের পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ টুইট করেছেন। এতে তিনি লিখেন: ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করার অভিযোগে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া তাকে একাধিক নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি আদালতে হাজির হননি।’
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। চারজনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এদিকে ইমরান খানের গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশটির সবগুলো শহর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যানকে । তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার একটির শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে জামিনের আগেই আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে গ্রেফতার করার পর ইমরানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে রাখা হয়েছে নাকি অন্য কোথাও নেওয়া হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ইসলামাবাদ পুলিশের টুইটার পেজে জানানো হয়েছে, ‘আল–কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এদিকে ইমরান খান গ্রেফতার হওয়ার পরপরই উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো পাকিস্তান। করাচী, লাহোর ও পেশোয়ারসহ সবগুলো শহরে বিক্ষোভ শুরু করেছেন পিটিআই নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
স্থানীয় টিভিতে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে জড়ো হয়েছেন পিটিআইয়ের কয়েকশ’ কর্মী–সমর্থক। সেখানে তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়।
পিটিআই নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দমাতে শহরে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর করাচীতে জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছে পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনীর এই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে।
লাহোরের পূর্বাঞ্চলে ইমরান খানের বাসভবনের পাশেই জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছে পিটিআই নেতাকর্মীরা। সেখানেও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply