বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

স্যামসাংয়ের প্রান্তিক মুনাফা ১৪ বছরের সর্বনিম্নে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩

আন্তর্জাতিক বাজারে চিপের চাহিদা কমেছে। বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার প্রভাবে কম্পিউটার নির্মাতাসহ প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চিপ ক্রয়ের প্রবণতাও নিম্নমুখী। এ পরিস্থিতির মধ্যেই প্রথম প্রান্তিকের লেনদেন সম্পন্ন করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাং ইলেকট্রনিকস।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, স্যামসাংয়ের প্রথম প্রান্তিকের মুনাফা প্রান্তিকওয়ারি ৯২ শতাংশ কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৪ বছরের প্রান্তিকভিত্তিক মুনাফা অর্জনের তুলনায় যা সবচেয়ে কম।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন চালু করে সেলফোনের বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের মুনাফার পরিমাণ বাড়তে পারে। কিন্তু স্যামসাংয়ের চিপ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির প্রান্তিকভিত্তিক লোকসানের পরিমাণ ৩ ট্রিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা ২৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। কেননা মেমরি চিপের দাম কমার পাশাপাশি মজুদকৃত পণ্যের মূল্যও কমেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম মেমরি চিপ, টেলিভিশন ও স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি আগামীকাল প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন ও চলতি মাসের শেষের দিকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও সময়টি ব্যবসায়িকভাবে তুলনামূলক দুর্বল পরিস্থিতিতে রয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রিফিনিটিভ বলছে, মার্চে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা সম্ভবত ১ লাখ ৮ হাজার কোটি ওনে নেমে আসতে পারে। ২০০৯ সালের প্রথম প্রান্তিকের পর যা সর্বনিম্ন। প্রযুক্তি জায়ান্টটির তথ্যানুযায়ী, ১৪ বছর আগে তাদের মুনাফা নেমে এসেছিল ৫৯ হাজার কোটি ওনে। তবে গত বছর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা ছিল ১৪ লাখ ১২ হাজার কোটি ওন।

তাইপেইভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক সংস্থা ট্রেন্ডফোর্সের তথ্যানুসারে স্মার্টফোন, ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও সার্ভারে বহুল ব্যবহৃত ডায়নামিক অ্যাক্সেস মেমরি চিপসের (ডিআরএএম) দাম কমেছে ২০ শতাংশ। এছাড়া ডাটা স্টোরে ব্যবহৃত ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরির মূল্য প্রায় ১০-১৫ শতাংশ কমেছে।

ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির ফলে প্রযুক্তি পণ্য ঘিরে ভোক্তাদের চাহিদা হ্রাসের কারণে ডাটা সেন্টার অপারেটর, স্মার্টফোন ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার নির্মাতাসহ অন্যান্য ক্রেতাও নতুন চিপ ক্রয় থেকে বিরত থাকছেন। পরিবর্তে তারা মজুদকৃত পণ্য ব্যবহার করছেন। তাছাড়া সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় চিপের ক্রয়াদেশ প্রদানকারীরাও নতুন বিনিয়োগের বিষয়ে রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করছেন।

এদিকে চিপ মন্দা কমপক্ষে ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত স্থায়ী হবে ধরে নিয়ে দুই প্রতিযোগী মার্কিন প্রতিষ্ঠান মাইক্রন টেকনোলজি ও দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান এসকে হাইনিক্সও, তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা কাটছাঁট করেছে। স্যামসাং যদিও এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আনেনি। বিশ্লেষকরা বলেছেন, প্রযুক্তি জায়ান্টটি মূলত অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় বাজার হিস্যা বাড়ানোর দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। কেননা ভবিষ্যতে বাজার চাহিদার সুযোগটি যথাযথভাবে কাজে লাগাবে প্রতিষ্ঠানটি।

ফেব্রুয়ারিতে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্যামসাং ডিসপ্লে ইউনিট থেকে তারা ২০ ট্রিলিয়ন ওন ধার করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এর অর্থ ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত তাদের পরিচালন তহবিল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় টেক জায়ান্টটি।

এদিকে স্যামসাং মোবাইল ব্যবসায় পরিচালন মুনাফা প্রথম প্রান্তিকে ৯ শতাংশ কমে ৩ লাখ ৪৬ হাজার কোটি ওনে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে কয়েকটি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান। যদিও স্মার্টফোনের চাহিদা সামগ্রিকভাবে কমেছে। প্রিমিয়াম মডেলগুলোর চাহিদাও অনেকটা স্থিতিস্থাপক পর্যায়ে রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কে বৈশ্বিক আর্থিক বিনিয়োগ সংস্থা আইবিকে ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক কিম উন-হো বলেন, সদ্য সমাপ্ত প্রান্তিকে এস২৩ সিরিজসহ উচ্চ বাজেটের ফ্ল্যাগশিপ মডেলগুলো বিক্রির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বড় ধরনের মুনাফা করেছে। এর মাধ্যমে স্যামসাং সামগ্রিক বিক্রির প্রায় ২০ শতাংশ অর্জন হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS