শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৭ অপরাহ্ন

জিএম কাদের: টেলিফোনে আড়ি পাতা সংবিধান লঙ্ঘন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

টেলিফোনে আড়ি পাতা সংবিধান লঙ্ঘন বলে সংসদে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জি এম কাদের বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনছি, বিরোধী মতালম্বীদের বিশেষ করে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারের বিরোধিতা করে কথা বলেন এমন ব্যক্তিদের স্মার্টফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। এটা নাকি ইসরায়েলি কোম্পানি ‘প্যাসিটোরার তৈরি স্পাইওয়ার’ নামে একটি প্রযুক্তির মাধ্যমে। ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিশ্বের ২৭টি নামিদামি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বিশ্বের ৪৫টি দেশে স্মার্টফোনে আড়িপাতার জন্য একটি গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। সে তালিকায় বাংলাদেশও আছে। সেখানে রিপোর্টে বলা হয়েছে- স্মার্টফোনে অড়ি পাতার জন্য ‘পিয়ারহেড বা ‘স্পাই ওয়ার’ ব্যবহার হচ্ছে। ২০২২ সালে ৫৭ লাখ ইউএস ডলার ব্যয়ে এ আড়িপাতা প্রযুক্তি কিনেছে বাংলাদেশ। যা সুষ্পষ্টভাবে আমাদের সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদের ৪৩ ধারার লঙ্ঘন।

জিএম কাদের আরও বলেন, সংবিধানে বলা আছে- প্রত্যেক নাগরিক নিয়মিত কথা বলা ও মনোভাব আদান-প্রদান করতে পারবে, এটা তার জম্মগত অধিকার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিরেকে স্পাই ওয়ার বা যেই প্রযুক্তি ব্যবহার করুক না কেন তা সংবিধানের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন বলা যায়। যে কোন ব্যক্তিকে টার্গেট করে তার ফোনে আড়িপাতা অনৈতিক ও সংবিধান পরিপন্থী। এগুলো ব্যবহৃত হয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড জানার জন্য। কিন্তু আমাদের এখানে এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে যারা সরকারের বিরোধিতা করে তাদের ফোনালাপ, ম্যাসেঞ্জারে নিয়মিত আড়িপাতা ও রেকর্ড করার জন্য।

তিন বলেন, সরকার কি এসব ব্যক্তিদের রাষ্ট্রদ্রোহী মনে করে এসব করছে? তাহলে গণপ্রজাতন্ত্রী অর্থাৎ যেখানে জনগণই রাষ্ট্রের মালিক, সেখানে রাষ্ট্র কি এটা করতে পারে? তাহলে সরকারি দল ও রাষ্ট্র কি একীভূত হয়ে গেছে? এমনটি হলে সেখানে সুশাসন দেয়া সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, আর একটা হতে পারে- সকল বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করা। একে অপরের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান বা কথা বলার অধিকার এদেশের মানুষের জম্মগত অধিকার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, যে দেশে প্রজাগণ মালিক তারা কথা বলবে, মত প্রকাশ করবে সেটা সকলের কর্তব্য। এ ধরনের আড়িপাতার কর্মকাণ্ড এদেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

এসময় এসব প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধের আহ্বানও জানান বিরোধী দলীয় উপনেতা।

নিরাপদ সড়ক আইনের বাস্তবায়ন কেন সরকার করছে না? এ প্রশ্ন তুলে জি এম কাদের বলেন, যে আইনটি এই জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হলো। তা কার স্বার্থে, কাদের রক্ষার্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, এর প্রতিবাদে সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আনা উচিৎ। তবে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এমনটি হলে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা গেলেও এদেশের পার্লামেন্টে তা সম্ভব নয়।

রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণের চিত্র তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, বিশ্বের বহু দেশ থেকে রাজধানী ঢাকায় দূষণের মাত্রা এত বেশি যে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মানুষ মারা যাচ্ছে, নানা রকম ফুসফুসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এটি রোধ করার কথাও বলেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS