সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন

একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংক ধ্বংসে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

একীভূত হওয়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের অব্যবস্থাপনা ও ধসের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চায় সরকার। এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংককে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে।

চিঠিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর মালিক, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ ও বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী- এই পাঁচটি সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক একীভূত হয়ে নতুন ব্যাংক গঠন করবে। নতুন ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি দেবে সরকার এবং আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকা রূপান্তর করা হবে শেয়ারে।

উল্লেখ্য, এক্সিম ব্যাংক দীর্ঘ দিন নিয়ন্ত্রণ করতেন ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তার স্ত্রী নাসরিন ইসলামসহ একাধিক ঘনিষ্ঠ পরিচালক বোর্ডে ছিলেন। দীর্ঘ সময় ব্যবস্থাপনায় থাকা তিন এমডি ফরীদ উদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন- ব্যাংকের সংকটময় সময়ে নেতৃত্বে ছিলেন। নজরুল ইসলাম মজুমদার এবং মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংকের বোর্ডেও পরিবারের সদস্যরাই দাপট দেখিয়েছেন। শুরুতে চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলমের ছেলে আহসানুল আলম। পরে দায়িত্ব পান অধ্যাপক মো. সেলিম উদ্দিন। বিভিন্ন সময়ে বোর্ডে যোগ দেন প্রভাবশালী সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা। ব্যাংকের সাবেক এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী সরকার পরিবর্তনের পর দেশত্যাগ করেন।

এ ছাড়া চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের প্রধান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য বোর্ডে ছিলেন। দীর্ঘ সময় এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এ এ এম জাকারিয়া এবং সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী। ব্যাংকের অনিয়ন্ত্রণ, দুর্বল তদারকি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে আর্থিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রবাসী নিজাম চৌধুরী। অন্য সব পরিচালকই ছিলেন এস আলম পরিবারের সদস্য বা তাদের ঘনিষ্ঠজন। শুরুতে আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে যোগ দেন হাবিব হাসনাত। ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ ও প্রভাবশালী খেলাপিদের কারণে ব্যাংকটি দ্রুত দুরবস্থায় পড়ে।

২০১৭ সালে এসআইবিএলের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। শুরুতে বোর্ডের নেতৃত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফ। পরবর্তীকালে চেয়ারম্যান হন গ্রুপের জামাতা বেলাল আহমেদ। ২০১৭ সালের পর বোর্ডে পরিবর্তন আনলেও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS