ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত মোস্তাফিজ ও ফয়সালকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি)। হেলিকপ্টারে তাদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। বুধবার (২৬ জুন) বিকেল ৪টার দিকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে বুধবার দুপুর থেকে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ডিবি প্রধান হারুন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে সেখানে একাধিক টিম কাজ করেছে।
ডিবির সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে— সংসদ সদস্য আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম দুই পলাতক আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজ খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ে অবস্থান করছেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ধরতে ডিবির টিম সেখানে হাজির হয়ে অভিযান চালানো হয়। মোস্তাফিজ ও ফয়সালের কাছে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন— সন্দেহভাজন আসামিদের মধ্যে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল সংসদ সদস্য খুন হওয়ার আগে গত ২ মে কলকাতায় যান। তারা দেশে ফিরে আসেন ১৯ মে। এই দুজনকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল ডিবি। দুজনের বাড়ি খুলনার ফুলতলায়। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে চিহ্নিত শিমুল ভূঁইয়ার বাড়িও একই এলাকায়।
সূত্র জানায়, আনার হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫ আসামি পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন— এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত মো. আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলী সাজি, চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া, তাজ মোহাম্মদ খান ওরফে হাজী ও মো. জামাল হোসেন।
অপর দিকে এমপি আনার অপহরণ মামলায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেন— আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও সিলিস্তি রহমান। এছাড়া পরে গ্রেফতার হন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গ্যাস বাবু ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু।
এছাড়া কলকাতার সিআইডির কাছে গ্রেফতার রয়েছেন দুজন। তারা হলেন কসাই জিহাদ হাওলাদার ও মো. সিয়াম হোসেন। সিয়ামকে গ্রেফতার করেছিল নেপাল। পরবর্তীতে কলকাতা পুলিশের কাছে সিয়ামকে হস্তান্তর করে নেপাল।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে— নিউটাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এরপরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতের পুলিশের বরাত দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply