ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দেয়া হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
রোববার (২৬ মে) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা আলাদা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। বয়সসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত মঙ্গলবার রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি ভর্তিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ভর্তি বাতিল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আলাদা আবেদন করেন, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে তাদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুই অভিভাবকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শামীম সরদার।
শামীম সরদার বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আলাদা দুটি আবেদন করেন। চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ দেননি। নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন। ফলে হাইকোর্টের রায় ও ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে অপেক্ষামাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আপাতত বহাল থাকছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২১ মে) শিশু শিক্ষার্থীদের বয়স জটিলতা ও ত্রুটিপূর্ণ ভর্তি নীতিমালার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়ে পাশাপাশি তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন আদালত। একইসঙ্গে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিলই থাকবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
এরপর ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারিসহ ভর্তি বাতিলের আদেশ দেন আদালত। পরে মাউশির নির্দেশনায় ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ভর্তি বাতিল হওয়া সব শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণির। গত ১৪ জানুয়ারি ভর্তি-ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক রিট করেন। তাদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট বয়সের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে স্কুলেটিতে।
এরপর ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারিসহ ভর্তি বাতিলের আদেশ দেন আদালত। পরে মাউশির নির্দেশনায় ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পরে ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ১৩৬ জন অভিভাবক আরেকটি রিট করেন। এ নিয়ে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল জারি করেন। আলাদা রুলে একসঙ্গে শুনানি শেষে রায়ের জন্য এদিন ধার্য করে দেন হাইকোর্ট।
আদালতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী দুজন অভিভাবকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শামীম সরদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
রিট আবেদনকারী ১৩৬ জন অভিভাবকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান আর তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খুররম শাহ মুরাদ।
এ নিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে এবং ১৬৯ ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে অভিভাবকদের করা পৃথক রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।
রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২১ মে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। ভর্তি বাতিলই থাকলো ১৬৯ শিক্ষার্থীর।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply