রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

ভৈরবে ভাইয়ের হাতে বোন খুন, ঘাতক ভাই আটক

ইমন মাহমুদ লিটন 
  • আপডেট : বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ২৭১ Time View

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় বোন আমেনা বেগম (৪০) নামে এক নারী নিহত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে পৌর শহরের কমলপুর গাছতলাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রথমে ছুড়িকাঘাতে আমেনা আহত হলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে ঢাকা নেয়ার পথে নরসিংদী আসলেই রাস্তায় আমেনা বেগমের মৃত্যু হয়। 

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৯টায় ভৈরব থানা পুলিশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী গ্রাম থেকে ঘাতক ভাই কাল্লু মিয়া কে আটক করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম।

ঘাতক কাল্লু মিয়া নিহতে আপন ছোট ভাই ও পৌর শহরের গাছতলাঘাট এলাকার মো. আব্দুল গফুর মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, নিহত আমেনা বেগম ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী গ্রামের নাইম উদ্দিন খন্দকারের স্ত্রী। আমেনা বাবার কাছ থেকে জায়গা কিনে বাবার বাড়ির পাশেই বাড়ি করে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। নিহতের স্বামী নাঈম খন্দকার ৬ মাস আগে সৌদি আরব যান। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর  আবির (১৪), আলবি (১৩) ও আলিম (১০) নামে তিন সন্তানকে নিয়েই থাকতেন আমেনা। 

নিহতের মা সখিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী আব্দুল গফুর মিয়া একজন অসুস্থ মানুষ। বাবার কাছে জায়গা কিনে আমাদের বাড়ির পাশেই বাড়ি করে থাকেন আমার মেয়ে আমেনা বেগম ও তার পরিবার। এ নিয়ে প্রতিদিনই বাকবিতণ্ডায় জড়ান আমার ছেলে কাল্লু মিয়া। কাল্লু একজন মাদকাসক্ত। আমাকেও প্রায় সময় মারধর করতে আসে। আমি ওর ভয়ে  বাড়িতে বেশি থাকি না। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে নেশা করে বাড়িতে এসে আমার মেয়ের সাথে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে কাল্লু তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে আমেনাকে চোখে ও শরীরে আঘাত করে। এতে আমার মেয়ে বাড়ির উঠানে লুটিয়ে পড়ে। পরে মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। রক্তাক্ত অবস্থায় আমার মেয়েকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে রাস্তায় মারা যায়। আমি আমার মেয়ের বিচাই চাই। আমার তিন নাতীকে আমার ছেলে এতিম করেছে।  আমি ওর ফাসিঁ চাই।

নিহতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী তুশি বলেন, প্রতিদিন কোন না কোন বিষয় নিয়ে আমেনা আপার সাথে কাল্লুর বাকবিতণ্ডা হতো। মঙ্গলবার বিকালেও কথা কাটাকাটি করে আমেনা আপাসহ আমাদের মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয় কাল্লু। আমার চার মাসের শিশুর শরীরেও মরিচের গুড়া পরে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই ছুড়ি দিয়ে আমেনা আপাকে আঘাত করতে থাকে কাল্লু। এতে আমেনা আপা গুরুত্ব আহত হয়।

নিহতের বড় বোন শিরিনা বেগম জানান, কাল্লু এর আগেও আমার ছোট ভাই ও বোনদের হত্যা চেষ্টা করেছে। আজকে আমার বোনকে মেরেই ফেলেছে। আমি কাল্লুর ফাঁসি চাই। 

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাট এলাকায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে বড় বোনকে তার ছোট ভাই ছুরি দিয়ে আঘাত করে আহত করে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে আমেনা বেগমের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ঘাতক ভাইকে তার শ্বশুরবাড়ি মানিকদী থেকে আটক করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS