শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

আইফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করল চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৭২ Time View

সরকারি কর্মকর্তাদের অ্যাপল আইফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে চীন। এমনকি আইফোনের পাশাপাশি বিদেশি ব্র্যান্ডের অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার না করতে এবং সেগুলো অফিসে না আনতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দেশটিতে। বাণিজ্য, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধ চলছে এবং এর মধ্যেই আইফোন ব্যবহারের বিষয়ে এই নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি সামনে এলো।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তাদের অ্যাপলের আইফোন এবং অন্যান্য বিদেশি ব্র্যান্ডের ডিভাইস কাজের জন্য ব্যবহার না করার বা অফিসে না আনার নির্দেশ দিয়েছে চীন। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন বেশ কয়েকজনকে উদ্ধৃত করে বুধবার এই তথ্য সামনে এনেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাজের জন্য আইফোন ব্যবহার না করা বা সেগুলো অফিসে না আনার বিষয়ে গত কয়েক সপ্তাহে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের অধস্তনদের এসব আদেশ দিয়েছেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞার পরিসর ঠিক কতটা ব্যাপক তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রয়টার্স বলছে, আইফোন ব্যবহারের বিষয়ে চীন সরকারের এই নিষেধাজ্ঞাটি এমন এক সময়ে দেওয়া হলো যখন পরের সপ্তাহে আইফোনের একটি মডেল বাজারে আসার কথা রয়েছে এবং পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন- চীন-মার্কিন উত্তেজনা বাড়ার সাথে সাথে চীনে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এমন বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটি উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

অবশ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে অ্যাপল আইফোন ছাড়া অন্য কোনও ফোন নির্মাতার নাম উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া অ্যাপল এবং চীনের স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিসের সঙ্গে এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

চীনের স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস মূলত চীনা সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে।

রয়টার্স বলছে, চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে আরও মনোযোগী হয়েছে এবং চীনের বাজারে থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন আইন তৈরি করেছে।

চিপ শিল্পসহ প্রযুক্তিখাত নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে চীন-মার্কিন উত্তেজনা বেশ বেড়েছে। গত আগস্ট মাসের শুরুতে মাইক্রোচিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই বেইজিং সেমিকন্ডাক্টর তৈরির প্রধান দুটি উপাদান রপ্তানির ওপর তাদের আরোপ করা বিধি-নিষেধ কার্যকরের উদ্যোগ নেয়।

এর আগে মাইক্রোপ্রসেসর প্রযুক্তি শিল্পে চীন যাতে খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন। আর এরপরই চীন গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।

মূলত ইলেকট্রনিক্স ও কম্পিউটার চিপসহ সামরিক সরঞ্জামাদি উৎপাদনে এই দুটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর বিশ্বব্যাপী যত গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম ব্যবহার করা হয় তার সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ চীন।

এদিকে গত সপ্তাহে চীন সফরের সময় মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো বলেছিলেন, চীন ‘অবিনিয়োগযোগ্য’ হয়ে উঠেছে বলে মার্কিন কোম্পানিগুলো তার কাছে অভিযোগ করেছে। এসব কোম্পানি জরিমানা, অভিযান এবং অন্যান্য পদক্ষেপের দিকেও ইঙ্গিত করেছে যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে ব্যবসা করাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

অবশ্য এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে এবং চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। আর আইফোন নিয়ে চীনের সর্বশেষ বিধিনিষেধটি আগের সেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞারই প্রতিফলন।

উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের মধ্যে চীন অ্যাপলের অন্যতম বড় বাজার এবং মার্কিন এই সংস্থাটির আয়ের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ আসে এশীয় এই পরাশক্তি দেশটি থেকে।

-রয়টার্স

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS