নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর হতে এদেশের ১৩টি জেলায় ৭০টি ক্যাম্পে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিরা সব রকমের মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত হয়ে অসহায় ও মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর উর্দুভাষীদের জান-মাল নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকায় ১৯৭২ইং সনে আই.সি.আর.সি রেডক্রস নামক আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা পাকিস্তান প্রত্যাবর্তনের জন্য বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে একত্রিত করে উর্দুভাষীদের একটি তালিকা প্রণয়ন করেন।
সে তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রায় ১ লক্ষ ৬৯ হাজার উর্দুভাষীদেরকে পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করা হয়। এরপর ১৯৭৪ইং সালের পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে বিভক্ত উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিদের পুনরায় প্রত্যাবর্তন করা হয়নি। তখন এই হতভাগা জনগোষ্ঠি চরম হতাশায় ভুগলে উষ্ণ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জনাব এম. নাসিম খান বাধ্য হয়ে পাকিস্তান প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াকে তড়ান্বিত করাসহ পাকিস্তান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য উনার নেতৃত্বে ট্রান্ডেড পাকিস্তানীজ জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত করেন। যার শাখা-প্রশাখা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বসবাসরত উর্দুভাষীদের ক্যাম্পে অদ্যবধি স্থাপিত আছে।
বর্তমানে আমরা পাকিস্তান সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা প্রকাশ করে পাকিস্তান প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ার দাবীর পরিবর্তে এদেশেই পুনর্বাসিত হতে চাচ্ছি। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উর্দুভাষীদেরকে এদেশে সম্মানজনক পুনঃর্বাসনের ঘোষণা দেয়ায় আমরা উনার উপর ১০০% আস্থাশীল হয়ে আমাদের সংগঠনের সংক্ষিপ্ত নাম SPGRC ঠিক রেখে ২/১টি অর্থ পরিবর্তন করে বর্তমান কমিটির নাম “ট্রান্ডেড পিপিলস জেনারেল রিহ্যাবিলিটেশন কমিটি” ঘোষণা করছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ৬ই মার্চ, ২০২২ইং এবং ১৯শে ফেব্রুয়ারী, ২০২০ইং তারিখে কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধনের সময় প্রকাশ্যে জনসম্মুখে বলছেন উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিকে পাকিস্তান সরকার ফিরিয়ে নেয়নি, আমি তাদেরকে এদেশে সম্মানজনক পুনর্বাসন করে দেবার জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছি। উনার এই মহানুভবতায় আমরা উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিরা আশ্বস্ত ও খুবই আনন্দিত হয়েছে। মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর হায়াতে বরকত দান করুন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমাদের কয়েকটি মূল্যবান বার্তা পৌঁছে দিতে চাচ্ছি। যথা:-
১। সারা বাংলাদেশে বসবাসরত উর্দুভাষীদের যতদিন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন না হয় ততদিন পর্যন্ত তাদেরকে কোন রকম হয়রানী বা উচ্ছেদ করা যাবে না মর্মে একটি সরকারী আদেশ জারী করা হোক ৷
২। যতদিন পর্যন্ত উর্দুভাষী জনগোষ্ঠিদের পুনর্বাসন হচ্ছে না ততদিন পর্যন্ত প্রণিত বিধি অনুযায়ী ক্যাম্পের সকল সুযোগ- সুবিধাসহ বিদ্যুৎ, পানি ও নিরাপত্তা বহাল রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশ দান।
৩। সারা বাংলাদেশে সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অসহায় গরীব-দুঃখীদের জন্য নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান সহ তাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে, সেই সুবিধার আওতায় উর্দুভাষীদেরকেও অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
8। আপনারা অবগত আছেন যে, বিগত ৪৬ বছর যাবত এই উর্দুভাষী জনগোষ্ঠির কল্যাণ এবং তাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের সংগঠন অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারীভাবে উর্দুভাষীদের যখনই কোন তালিকা প্রণয়ন ও পুনর্বাসন করা হবে তাতে SPGRC সংগঠনকে সম্পৃক্ত করা হোক ।
৫। ০৫/১০/২০১৯ইং তারিখে SPGRC নেতৃবৃন্দের উপর রুজুকৃত মামলা প্রত্যাহার করা।
৬। রাবিতা ট্রাস্টে উর্দুভাষাদের পুনর্বাসনের জন্য হাবিব ব্যাংকে ৫০০ কোটি রুপি জমা রয়েছে উহা বাংলাদেশ সরকারকে ফেরত দেবার জন্য কুটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখা।
৭। শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের সরকারী উদ্যোগে চাকুরী প্রদান এবং কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের শিক্ষাবৃত্তির আওতায় এনে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান সহ বিদেশ প্রেরণের বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় আনা হোক।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে যারা উপবিষ্ট আছেন তারা হলেন:
(১) এম. শওকত আলী, কার্যকরী সভাপতি, এস.পি.জি.আর.সি বাংলাদেশ।
(২) এস.কে. গোলাম জিলানী, সহ-সভাপতি, এস.পি.জি.আর.সি বাংলাদেশ।
(৩) হারুন-অর-রশিদ, সাধারণ সম্পাদক, এস.পি.জি.আর.সি বাংলাদেশ ।
(৪) মোঃ ইকবাল হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, এস.পি.জি.আর.সি বাংলাদেশ।
(৫) সোহেল আক্তার খান, সাধারণ সম্পাদক (জোনাল), চট্টগ্রাম বিভাগ ।
(৬) মোঃ হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক, খুলনা বিভাগ।
(৭) মোঃ শরফুদ্দিন, সভাপতি, রংপুর শাখা কার্যালয়, রংপুর।
আরও উপস্থিত আছেন- চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহেল আশরাফী । বগুড়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি আবুল কালাম । মিরপুর সেকশন ১০, ১১, ১২, আদমজী এবং রংপুরের নেতৃবৃন্দগণ সহ অগণিত নেতা-কর্মীরা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS