জানুয়ারিতে পাঁচ দিন শীর্ষ দূষিত শহরে নাম উঠে আসার পর মার্চেও টানা তিন দিন বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা। এ অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান দূত জেমস জে. শাওয়ার সম্প্রতি ঢাকা সফর করে বায়ুদূষণ কমাতে ৬টি সুপারিশ দিয়েছেন।
প্রতিবছর ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের বছরের রেকর্ডকে। এ বছরের ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি টানা পাঁচ দিন বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর হয় ঢাকা। একই মাসে নয় দিন রাজধানীর বায়ুমান ছিল দুর্যোগপূর্ণ, যা গত সাত বছরে সর্বোচ্চ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ারের জরিপে দেখা যায়, চলতি মাসের প্রথম দিকেও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের শীর্ষে ছিল ঢাকা।
এ অবস্থার মধ্যেই এক সপ্তাহের জন্য ঢাকা সফর করেন বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণ প্রশমনের লক্ষ্যে কাজ করা মার্কিন গবেষক জেমস জে. শাওয়ার। ঢাকার বায়ুমান পর্যবেক্ষণে যে উন্নতমানের যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তার একটি রয়েছে মার্কিন দূতাবাসে। প্রফেসর শাওয়ার যখন এই যন্ত্রের কার্যকারিতা দেখাচ্ছিলেন তখনও ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর হিসেবে উঠে আসে যন্ত্রে।
আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার বায়ুতে ক্ষতিকর বস্তুকণা পিএম টু পয়েন্ট ফাইভের উপস্থিতি ১০ থেকে ১৫ ভাগ বেশি। এই ক্ষতিকারক বস্তু যেকোনো অসুস্থতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে জানান মার্কিন এই গবেষক।
তিনি বলেন, ‘বায়ুদূষণ সরাসরি কোনো রোগ তৈরি করে না। তবে শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ইতিবাচক বিষয় হলো, পাঁচ বছর আগের তুলনায় এখন বাংলাদেশে বায়ুদূষণ নিয়ে গবেষণার পরিমাণ বেড়েছে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান দূত হিসেবে কর্মরত এই অধ্যাপক ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে ৬টি সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো হলো: মনিটরিং বা পরিবীক্ষণ, গভর্নেন্স, শিল্পগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব, জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করা, গবেষণা ও মূল্যায়ন। জোর দেন বায়ুদূষণ নিয়ে গবেষণা, দূষণের উৎস শনাক্ত করা এবং একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কৌশল তৈরি ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দিকে।
জেমস জে. শাওয়ার বলেন, ‘বায়ুদূষণের বিষয়ে যথাযথ পরিবীক্ষণ ও বোঝাপড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে এ সমস্যা নিরসনে আমরা প্রয়োজনীয় কৌশল ঠিক করতে পারি। বায়ুদূষণ নিয়ে অনেক কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। পেশাগত জায়গা থেকে মনে করি, বায়ুদূষণ প্রশমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’
বায়ুদূষণ কমিয়ে আনা অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান মার্কিন এ গবেষক।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply