সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০ অপরাহ্ন

বিনিয়োগে আস্থা বাড়াবে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন—আশিক চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪৬ Time View

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন।

ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা সিগন্যাল দেয় যে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধবতার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ; বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা কনফিডেন্স বুস্টার। গত সপ্তাহে আরও একটা ভালো ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে: বাংলাদেশ-জাপান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ)।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বা ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) আবশ্যক। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বি দেশগুলো এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। ভিয়েতনামের এমন চুক্তি আছে প্রায় ৫০টি দেশের সঙ্গে, কম্বোডিয়ার আছে প্রায় ২০টি দেশের সঙ্গে। আর আমাদের এমন কম্প্রিহেনসিভ এগ্রিমেন্টের সংখ্যা শূন্য। আমরা এই গোল্ডেন ডাক ব্রেক করতে যাচ্ছি জাপানের সঙ্গে ইপিএ করে। গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে নেগোশিয়েশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ধাপসমূহ সম্পন্নের পর এটি কার্যকর হবে।

তার ভাষ্যে তিন কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এটা বিশাল একটি পদক্ষেপ। তা হলো,

বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান
বিনিয়োগকারীরা ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে অপারেট করতে পছন্দ করে। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো সেই ফ্রেমওয়ার্কটা তৈরি করেছে এফটিএ বা ইপিএ-র মাধ্যমে। আমাদের এগুলো না থাকার কাফফারা হিসেবে জাপানের উদাহরণ দেওয়া যায়। এত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়া সত্বেও বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ গত ৫৪ বছরে হয়েছে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার। এই ইপিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাপানি বিনিয়োগকারীরা পলিসি কনটিনুইটি, লিগ্যাল জুরিসডিকশন, এমএফএন, ইত্যাদি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাবে। আগামী দিনে বিনিয়োগ শুধু পরিমাণে নয়, বৈচিত্র্য ও গুণগত মানেও বহুগুণে বাড়বে। জাপান হতে বিশেষ কিছু খাতে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে, আইটি ও ডিজিটাল সেবা, লজিস্টিকস ও সাপ্লাই চেইন, ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোটিভ যন্ত্রাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষি/অ্যাগ্রো-প্রসেসিং। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।

জাপানে আমাদের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার
বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রথম দিন থেকেই পোশাকসহ ৭,৩৭৯ টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পক্ষান্তরে, জাপান ১,০৩৯ টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। সেবা বাণিজ্য খাতেও উভয় দেশ উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাতে ৪টি মোডে সার্ভিস উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে জাপান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোর একটা বড় সমাধান হচ্ছে দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে ইম্পর্ট্যান্ট দেশগুলোর সঙ্গে এই চুক্তি সম্পন্ন করা। অন্যান্য দেশে এসব এফটিএ/এপিএ নেগোসিয়েশনের জন্য সরকারে স্পেশালিস্ট এক্সপার্ট টিম থাকে। আমরা প্রথমবারের মতো একটা সলিড দল তৈরি করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমেরিকা, কোরিয়া, তুরস্ক, ইত্যাদি দেশের সঙ্গে অলরেডি কথা শুরু হয়েছে। এই দলটা কিছুদিনের মধ্যেই ঝানু নেগোসিয়েটরে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালে আমরা চেষ্টা করেছি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে বেসিক কিছু ট্র্যাক সেট করা। আশা করছি আগামী সরকার এই ভীত গড়ার উদ্যোগ থেকে উপকৃত হবে এবং দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS