একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৌলভীবাজারের আব্দুল আজিজ হাবলুসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলো আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মতিন। এর মধ্যে মতিন পলাতক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্যেরা হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও কে এম হাফিজুল আলম।
আদালতে আসামিদেরপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এম. সারোয়ার হোসেন ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, রানা দাশ গুপ্ত, ঋষিকেশ সাহা, সুলতান মাহমুদ সীমন, সাহিদুর রহমান, জাহিদ হাসান, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, রাজিয়া সুলতানা চমন, ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, মোসফেকুর রহমান ও তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম. সানাউল হক।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য অপেক্ষমান) রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এক মাসের বেশি অপেক্ষায় থাকার পর আজ রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর তিন জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। দুই বছর পর ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর তদন্ত সমাপ্ত হয়। ওই বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। এরপর ১ মার্চ মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানা পুলিশ আব্দুল মান্নান ওরফে মনাই ও আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুলকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরের দিন ২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে, আব্দুল মতিনকে আর ধরা যায়নি।
২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মানবতাবরোধী অপরাধের মামলায় বড়লেখার তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। একই বছর ১ মার্চ মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানা পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর ২ মার্চ আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মান্নানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
একাত্তরে দুই সহোদর আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মতিন ছাত্রলীগ করতো। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের বারপুঞ্জিতে যায়। কিন্তু প্রশিক্ষণরত অবস্থায় পালিয়ে এসে তারা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়। অপর আসামি আব্দুল মান্নান একাত্তরে স্থানীয় মুসলিম লীগের নেতা ছিল। আব্দুল মতিন পলাতক রয়েছে। মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) মোট ১৭ জন বন্দি জবানবন্দি পেশ করেন। এরপর যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply