নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লক্ষ্মীপুরে কর্তব্যরত ভিজিটরের অবহেলায় একটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহিদা বেগম (৩২) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুতে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভাঙচুর চালায়। অবরুদ্ধ করে রাখা হয় ভিজিটর আকলিমাকে।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অবরুদ্ধ ভিজিটরকে উদ্ধার করে।
পুলিশ নিহতের স্বামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে।
জানা যায়, বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মহসিন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহিদা বেগমের প্রসব বেদনা দেখা দিলে তাকে নিকটস্থ উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপদ প্রসব সেন্টারে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত ভিজিটর আকলিমা বেগমের সহায়তায় রাতে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে শাহিদা একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। বাচ্চা প্রসবের পর থেকে শাহিদা বেগমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তখন স্বামী মহসিন বার বার স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভিজিটরকে অনুরোধ করেন তার স্ত্রীকে উন্নত চিকিৎসা জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার।
কিন্তু ভিজিটর আকলিমা রোগী শাহিদাকে অন্য হাসপাতালে নিতে দেননি। নিজেই ডাক্তার সেজে শাহিদা বেগমকে চিকিৎসা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ভোর রাতে সাহিদা মৃত্যু হয়। শাহিদার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে ভিজিটর আকলিমা সাহিদার স্বামীকে পার্শ্ববর্তী শামসুল হুদা জেনারেল হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। শাহিদার স্বামী তার স্ত্রীকে শামসুল হুদা জেনারেল হসপিটালে নিয়ে গেলে তারা রোগী গ্রহণ করতে রাজি হয়নি।
পরবর্তীতে নোয়াখালীর প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান রাতেই শাহিদার মৃত্যু হয়েছে।
পরে নিহতের স্বজনরা শাহিদার লাশ নিয়ে উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মিছিল করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ ও লক্ষ্মীপুর সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে রাত ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অবরুদ্ধ ইউনিয়ন পরিবার-পরিকল্পনার পরিদর্শক আকলিমা আক্তারসহ অন্য নারী নার্সদের সেনাবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান জানান, অবরুদ্ধ ভিজিটরসহ অন্যদের সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply