বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল আর নেই। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় নিজ বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। প্রায় তিন বছর ধরে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত ছিলেন জাতীয় দলের এ বাঁহাতি স্পিনার।
রুবেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক জাহিদুর রহমান চৌধুরী এ খবর নিশ্চিত করেন।
রুবেল শেষ কিছু দিন ভর্তি ছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তখন মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে সেই খবর ভুল প্রমাণ করে আগের থেকে কিছুটা সুস্থ বোধ করে বাসাতেও ফিরে গিয়েছিলেন রুবেল। কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। না ফেরার দেশে চলেই গেলেন জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার।
গত বছরের অক্টোবরে শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আইসিউইতে নেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেলকে। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছিলেন তিনি। সবশেষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে ডাক্তার দেখিয়ে আসেন। তবে দেশে ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এজন্য কিছুদিন পর আবার আইসিউইতে নেওয়া হয় রুবেলকে।
২০১৯ সালে মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়লে মাঠ থেকে ছিটকে পড়েন রুবেল। চিকিৎসা নিয়ে প্রায় সেরে উঠলেও নতুন করে টিউমার ধরা পড়ে তার মস্তিষ্কে। নতুন করে টিউমার ধরা পড়ায় শঙ্কায় পড়ে যায় রুবেলের জীবন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই ক্রিকেটার সিঙ্গাপুরেও চিকিৎসা করান।
ভালো না হওয়ায় গত বছরের নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের একটি হাসপাতালে আবারও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রুবেলের ব্রেন টিউমার অপসারণ করা হয়। তবে তাতেও খুব একটা উন্নতি হয়নি।
বয়সটা কেবল ৩৯-এ পড়েছে। জাতীয় দলের পাঠ চুকালেও ঘরোয়া ক্রিকেটের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারটা আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ ছিল রুবেলের সামনে। অথবা জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন সতীর্থের মতো কোচিংয়েও থিতু হতে পারতেন, বসতে পারতেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কোনো চেয়ারে।
যেমনটি বসেছেন শাহরিয়ার নাফীস, আব্দুর রাজ্জাকরা। রুবেল ছুঁটেছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে। এবার সব চেষ্টাকে মিথ্যে প্রমাণ করে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন মোশাররফ রুবেল।
২০০৮ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল মোশাররফ রুবেলের। তবে টিকতে পারেননি বেশিদিন। ২০১৬ সালে খেলেছেন সবশেষ ম্যাচ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সবমিলিয়ে ৫ ওয়ানডেতে চার উইকেট ও ২৬ রান করেছেন তিনি।
তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন এ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১১২ ম্যাচে ১৯ বার ইনিংসে ৫ উইকেটসহ মোট ৩৯২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ব্যাট হাতে দুই সেঞ্চুরিতে করেছেন ৩৩০৫ রান।
এছাড়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ১০৪ ওয়ানডেতে ১২০ উইকেটের সঙ্গে ১৭৯২ রান এবং ৫৬ টি-টোয়েন্টিতে ৬০ উইকেটের সঙ্গে ৬২ রান করেছেন তিনি। সবশেষ ২০১৯ সালের বিপিএলে স্বীকৃত পর্যায়ে ম্যাচ খেলেছেন রুবেল।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply