বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন

৫০ বছর ধরে বরিশালে শিকলে বাঁধা লক্ষন দাসের জীবন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২

তুহিন, বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামে ৫০ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে গাছের সাথে শিকল দিয়ে লক্ষন দাসকে বেঁধে রাখা হয়েছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮৭ বছরের বৃদ্ধ লক্ষন দাস উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের স্বর্গীয় ইশ্বর পুলিন বিহারী দাসের পুত্র।লক্ষন দাসের স্ত্রী আলো রানী দাস, বড় ছেলে শ্যামল দাস, ছোট ছেলে অমল দাস এছাড়াও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক মেয়ে রয়েছে। এদিকে রহস্যময় লক্ষন দাসের জীবন।


এলাকার মানুষ জানেন সে মানুসিক ভারসম্যহীন অথচ তার স্ত্রী বলছেন ভিন্ন কথা। তার স্বামীকে মনোসায় ভর করায় তাকে শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেধেঁ রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষন দাস নামের ওই বৃদ্ধকে খোলা আকাশের নিচে একটি গাছের সাথে পা শিকলে বাধা অবস্হায় মাটির সাথে লুটোপুটি খাচ্ছে এবং চিৎকার করে তার স্ত্রীর কাছে একটি বিড়ি চাচ্ছে।
লক্ষন দাসের সন্নিকটে গিয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে ।

আর ঠিক তখনই সে প্রথমে সাংবাদিকদের পরিচয় জানতে চায়।সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বলে উঠলো এখন আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন। তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় তার নিজের নাম ও বাবার নামসহ পরিবারের সকল সদস্য’র নাম ঠিকানা বলে দেন। এমনকী তখন মনে হয়নি সে মানুষিক ভারসাম্যহীণ।
এছাড়া তাকে শিকলে বেধেঁ রাখার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বলেন আমি পাগল তাই আমাকে ৫০ বছর ধরে বেধেঁ রাখা হয়েছে। আমি বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পেতে চাই।

অপরদিকে তার স্ত্রী আলো রানী দাসের কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তার স্বামী লক্ষন দাস তাদের বিয়ের পূর্বেই পাগল ছিল বলে তাকে ৪০/৫০ বছর ধরে গাছের সাথে শিকলে বেধেঁ রাখা হয়েছে।
পরিশেষে লক্ষন দাস পাগল কিনা প্রশ্নের জবাবে তার স্ত্রী আলো রানী বলেন, আমার স্বামী আসলে পাগল নয়। তবে আমার স্বামীর উপর মনোসার ভর ও পরীর দৃষ্টি রয়েছে তাই তার পায়ে শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেধেঁ রাখা হয়েছে। তবে খাবার সময়মত ঠিক ভাবে খাবারদিয়ে থাকি।

তার ছোট ছেলে রাজমিস্ত্রি অমল দাস জানান, তার বাবার পায়ের শিকল কয়েক বছর পূর্বে খুলে দেয়া হয়েছিল। তখন আশেপাশের বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন জিনিস চুরি করে থাকে তাই তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেধেঁ রাখি। এটা আইনের কোন বিষয় নহে। এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আর্শাদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS