নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গার্মেন্ট শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য বিগত ১৫-১০-২০১৮ ইং তারিখে নিম্নতম মজুরী হার ঘোষনা করেন। প্রকাশ থাকে যে, ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরীর হার শ্রমিকদের জন্য আদৌ পর্যাপ্ত না হওয়া সত্ত্বেও গার্মেন্ট সেক্টরের শিল্প ও শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থে তা মেনে নেয়া হয়। উল্লেখ থাকে যে, ২০১৮ সালের মজুরী বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে গার্মেন্ট সেক্টরের মালিকগন উৎপাদন বৃদ্ধির নামে শ্রমিকদের উপর অত্যাধিক কাজের চাপ বৃদ্ধি করে। হিসাবান্তে দেখা যায় যে, শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরীবৃদ্ধি তেমন হয়নি। উপরোন্ত পূর্বের তুলনায় ঢাকার মান নিম্নগামী হওয়ার মূল মজুরি বৃদ্ধির বদলে যথেষ্ট কমেছে।
গার্মেন্ট শিল্প সেক্টরের উল্লেখিত নিম্নতম মজুরীর হার ঘোষিত হওয়ার পর চার বৎসর কাল অতিক্র হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, করোনার প্রকোপ সহ বিভিন্ন কারণে শ্রমিকদের জীবন যাত্রার ব্যয় অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের জীবনযাপনের মান উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। প্রবা মূল্যেও উর্ধ্বগতির পাগলা ঘোড়ার দাপটে শ্রমজীবী মানুষ দিসে হারা । নিত্যপন্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষিতে আইবিসি ও জিনক্ষণ বার বার সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলকে নিম্নতম জুরী বোগঠন, মজুরী ঘোষনা ও বাস্তবায়ন, অন্যথায় শ্রমিকদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর দাবী জানালেও তা হয়নি।
দেশ এখন মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হতে কয়েক মাস এগিয়ে গেছে। দেশের মানুষের মাথা পিছু আয় বর্তমানে ২৭০০ ইউএস ডলার পৃথিবীর মধ্যে সাইজ অফ ইকোনোমি এর দিক দিয়ে বাংলাদেশ এখন ৩৫ তম অর্থনীতির দেশ। প্রতি বছর আর সেই ১৫%। দেশের অর্থনীতির বুনিয়াদও মজবুত এবং অবকাঠামো উন্নয়নে আরএমজি সেক্টর সবচেয়ে বেশী অবদান রাখছে এতদসত্ত্বেও আরএমজি সেক্টরের শ্রমিকদের মজুরী বিশ্বের আইএমজি রপ্তানীকারক দেশের মধ্যে সবচেে কম। বিধায়, সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আইবিসির দাবী মোতাবেক আরএমজি সেন্টারের শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরী বোর্ড গঠন ও নিম্নতম মজুরী ২৩,০০০/- টাকা ঘোষনা ও বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছে। দাধী পক্ষে আইবিসি সংবাদ সম্মেলন, বিক্ষোভ মিছিলসহ শ্রম মন্ত্রানালয়ে স্মারকলিপি পেশ, গাজীপুর, সাভার, নারায়নগঞ্জ, উরা, মিরপুর ও চট্টগ্রামে গার্মেন্টস শিল্পাতালে শ্রমিক সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছি।
আপনারা অবগত আছেন যে, “বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা বিধি ১২১ এ বলা আছে সরকার (বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩৮(৬) বাস্তবায়নের উদ্দ্যেশে উক্ত ধারার উপধারা (২) মোতাবেক মজুরী বোর্ডে মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও শ্রমিকগনের প্রতিনিধি মনোনয়নের লক্ষ্যে মালিক ও শ্রমিকগনের ফেডারেশনসমূহে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের নিকট হইতে এবং উপ ধারা (৩) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট শিল্পের সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী মালিক সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের অথবা ফেডারেশনের অবর্তমানে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়নের নিকট মনোনয়ন যাচনা করিবে” মর্মে বিধান রয়েছে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো শ্রম আইন ও বিধিমালা মোতাবেক গার্মেন্টস সেক্টরের মালিক পক্ষের প্রতিনিধি সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন থেকে নেয়া হলেও বিগত মঞ্জুরী বোর্ড গুলিতে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি নির্ধারণে আইন ও বিধিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এবারও আমরা জানতে পারছি যে, আসন্ন মজুরী বোর্ড গঠনেও আইন ও বিধিমালাকে পাশ কাটিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষ তাদের ইচ্ছেমত শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা নিন্দনীয়। আমরা আইবিসি এর পক্ষ থেকে এই অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ১২১ মোতাবেক সরকার সংশ্লিষ্ট শিল্পের সর্বাধিক প্রতিনিধিকারী সংগঠন থেকে প্রতিনিধি যাচনা করার কথা থাকলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত আরএমজি সেক্টরের বৃহত্তর জোট আইবিসি এর কাছ থেকে প্রতিনিধি চেয়ে কোন পত্র প্রদান করেননি, যা দুঃখজনক।
আইবিসি মজুরী বোর্ড গঠনে শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগের বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ইতিমধ্যে গত ০৯.০৩.২০২৩ তারিখ এক পত্রের মাধ্যমে মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মহোদয় ও মাননীয় শ্রম সচিব মহোদয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় বরাবরে আইবিসি’র পক্ষ থেকে আইবিসি সভাপতি জনাব আমিরুল হক আমিনকে প্রতিনিধি মনোনয়ন প্রদান করা হয়েছে (পত্র সংযুক্ত)।
এমতাবস্থায়, আইবিসি এর পক্ষ থেকে আমরা অবিলম্বে মজুরী বোর্ড গঠন ও মজুরী বোর্ডে আইবিসি’র মনোনিত প্রতিনিধি এর নাম নিম্নতম মজুরী বোর্ডে অর্ন্তভূক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি। অন্যথায়, দেশের অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনসহ বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
এছাড়াও গত ০৪/০৪/২०২৩ ও ০৫/08/2०২৩ ইং অনুষ্ঠিত টিসিসি ও আরএমজি টিসিসি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধের মাধ্যমে শ্রমিকদেরকে পরিবারের সাথে ঈদ উজ্জাপনের সুযোগ দিতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply