তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ১২৯ ঘণ্টা পর পাঁচ সদস্যের পরিবারকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের নুরদাগ শহরের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে পরিবারটিকে বের করে আনে উদ্ধারকর্মীরা। এ সময় ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনীতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পের পর ছয়দিন পেরিয়েছে। বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে চারদিকে লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। উদ্ধারকর্মী ও সাংবাদিকরা এমনটাই জানাচ্ছেন। আটকা পড়াদের জীবিত উদ্ধারে তৎপরতা জোরালো করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার (১১ ফেব্রুয়রি) পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। তুর্কি কর্তৃপক্ষ ও সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্যমতে, দেশ দুটিতে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৪৫৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কেই ২০ হাজার ৬৬৫ জনের মরদেহ রয়েছে। আর সিরিয়ায় ৩ হাজার ৫০০।
কয়েক হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। তবে হাড়হিম করা ঠান্ডায় আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা দেখছেন না তারা। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, এখন যদি কাউকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, তা হবে ‘অলৌকিক’ ঘটনা।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মোট ৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সবশেষ একসঙ্গে পাঁচ সদস্যের পরিবার উদ্ধার করা হলো। প্রতিবেদন মতে, উদ্ধারকারীরা প্রথমে মা ও তার কন্যাকে বের করে আনেন। এরপর একে একে বাবা ও তাদের আরও দুই সন্তানকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরার সাংবাদিক রিসাল সেরদার বলেন, চারদিকে লাশের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেক মরদেহ বের করে নিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। সময় দ্রুত শেষ হয়ে আসছে।
এদিকে ছয়দিন পরও তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের ধ্বসংস্তূপ থেকে দুই নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ওই দুই নারী ১২২ ঘণ্টা আটকা ছিলেন।
এদিকে জাতিসংঘ বলেছে, ভূমিকম্পের কারণে সিরিয়ায় নতুন করে ৫৩ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া দুই দেশে প্রায় ৯ লাখ মানুষের জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন। তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা জরুরি ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
সিরিয়ার অংশ তেমন মনযোগ পাচ্ছে না। তবে দেরিতে হলেও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকার। এসব এলাকায় ইতোমধ্যে ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply