শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

ভৈরবে স্কুলের পুরাতন মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ আয়ার বিরুদ্ধে

ইমন মাহমুদ লিটন 
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ইমন মাহমুদ লিটন, ভৈরব জেলা প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার মানিকদী আলফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী (আয়া) শরীফা খাতুনের বিরুদ্ধে পুরাতন মালামাল আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্কুলের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা লিপি বেগম।
স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা লিপি বেগম তার লিখিত অভিযোগে জানান, আলফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্বদিকে দুই রুম বিশিষ্ট একটি পরিত্যক্ত শৌচাগার ভেঙে ফেলার পর দুটি লোহার দরজা ও নয়শো কেজি পুরাতন রড শরিফা খাতুন কাউকে না জানিয়ে চুরি করে তাঁর নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। উক্ত মালামালের আনুমানিক মূল্য ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা হবে বলে উল্লেখ্য করা হয়। তাছাড়া ওই স্কুলে আয়ার চাকুরি নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ই মালামাল আত্মসাৎ করার অভিযোগ করা হয়। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ফাহমিদা খাতুনকে শিক্ষকরা জানানোর পরও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেন। তিনি অভিযোগে আরও বলেন, চাকরি নেয়ার সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে বয়স কমিয়ে চাকরিতে যোগদান করে শরীফা। ১৯৮৭ সালে আয়া পদে যোগদানের বয়স অনুযায়ী শরীফা খাতুনের বড়ো ছেলের বয়সের পার্থক্য ১১ বছর। এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।
একজন শিক্ষক বলেন, শরিফা খাতুন দরজা ও রড নিতে আমি দেখেছি। তবে কি ভাবে কার অনুমতিতে নিয়েছে তা জানি না এবং জানার প্রয়োজনও মনে করিনি।
সহকারী শিক্ষিকা জোনাকি বেগম বলেন, শরিফা খাতুন দরজা আর রড নিয়েছে ঠিকই। তবে আমরা কেহ জানি না সে কার অনুমতিতে নিয়েছে।
অভিযুক্ত শরিফা খাতুন বলেন, পুরোনো টয়লেট ভেঙে নতুন করার সময় আমি ৪০ হাজার টাকার পুরোনো ইট কিনে ছিলাম। তখন ঐ ইটগুলো পরিষ্কার ও পরিবহন করতে আমার অতিরিক্ত আরো ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। বিষয়টি আমি স্কুল কর্তৃপক্ষে কাছে জানালে তখনই তারা আমাকে টাকা দিতে চেয়েছিল আমি নেইনি। কয়েক মাস পূর্বে স্টোর রুমে পড়ে থাকা পুরোনো দুটো দরজা আর কিছু রড আমি নেবার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবদার করলে প্রধান শিক্ষিকা আমাকে দিয়ে দেয় আমি ইট কিনে লোকসানে পড়ায়। আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। অঅমি অত্যন্ত গরীব মানুষ। উচিত টাকা দিয়ে জিনিস কিনে এখন নানান কথা শুনতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও এলাকাবাসী এ প্রতিনিধিকে বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজি হওয়ায় লিপি বেগম অনেকটাই প্রভাব খাটায় সহকর্মী শিক্ষকদের সাথে। তার আচরণে আমরা অতিষ্ঠ হলেও চাকুরির সুবাদে সব কিছুই নীরবে সহ্য করে থাকি।
এ বিষয়ে আলফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাহমিদা খাতুন জানান, আয়া শরীফা খাতুন পূর্বে ৪০ হাজার টাকায় স্কুলের পুরোনো টয়লেটের ইট কিনে নিয়ে পরিষ্কার ও পরিবহন করতে তার ৮ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়। আয়া অত্যন্ত গরীব মানুষ হওয়ায় তার অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নেয়ার জন্যই স্টোর রুমে পরে থাকা পুরোনো দুটি দরজা ও কিছু রড নিতে চাইলে কমিটির মতামতের ভিত্তিতেই তাকে দেওয়া হয়েছে। শরীফা কোন মালামাল চুরি বা আত্মসাৎ করেনি। প্রয়োজনে কমিটির লোকজনের সাথে কথা বলার জন্য বলেন এ প্রতিনিধিকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, উল্লিখিত স্কুলের লিপি বেগম নামে একজন শিক্ষিকা আয়া শরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে মালামাল চুরির লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত আয়া শরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS