শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
সিনিয়র অফিসার পদের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করল বাংলাদেশ ব্যাংক হাদির মৃত্যু সংবাদে উত্তাল ঢাকা, নজিরবিহীন বিক্ষোভ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শরীফ ওসমান হাদী রাণীনগরে অবৈধভাবে পুকুরের মাটি বিক্রির অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের রিজার্ভ ৩২.৫৭ বিলিয়ন ডলার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চ নেতা ওসমান হাদি মারা গেছেন পুঁজিবাজারের তথ্য দিতে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: আছাদুর রহমান ২.১৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনবেন স্যালভো কেমিক্যালের এমডি নুজহাত আনোয়ার ডিএসইর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর আয়োজনে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত

ইউরোপে নেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা নিয়ে লাপাক্তা দালাল

ইমন মাহমুদ লিটন
  • আপডেট : বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৩ Time View

ভৈরব(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধি: ইউরোপের দেশে পাঠানো কথা বলে প্রতারকচক্রের সদস্যরা হাতিয়ে নিল একই গ্রামের ১৫ জনের কাছ থেকে ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ভুক্তভোগীরা। আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগটি উঠে ঢাকার গুলশান ও  শাহজাদপুরে থাকা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এর মালিক, তার স্ত্রী ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলো ট্রাভেলস মালিক কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নের সামসুল হকের ছেলে এম, এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী ম্যানেজিং পাটনার সাফরিন হক ও ম্যানেজার ইউনুস। এসময় সংবাদ সম্মেলনে থাকা ভুক্তভোগীরা প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে পাসপোর্টসহ টাকা ফেরতের দাবি জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ও অভিযোগকারী শ্রীনগর উত্তরপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে মো. মামুনুর রহমানের মামা তৌফিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সালে আগস্ট মাসে আমার ভাগিনা ইতালি প্রবাসী আসরাফুল আলমের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এর মালিক এম, এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন হকের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথে কথা হলে ভুক্তভোগীদের প্রথমে কানাডার জন্য ওর্য়াক পারমিট জব অফার লেটার ভিসা প্রদান করেন। আমার ভাগিনা ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে রুস্তম আলী ও আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে মো. ইব্রাহীম মিয়ার কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নিয়ে পাসপোর্ট দিয়ে ভারতীয় ভিসা সংযোজন করে। পরে আমার ভাগিনার কাছ থেকে কানাডা নেয়ার কথা বলে আরো ১০ লাখ টাকা নেন। টাকাগুলো নিয়ে গত বছর ১২ মার্চ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৭ জনকে ভারত ও নেপাল নিয়ে যায়। ভিসা জালিয়াতির কারণে ভারত থেকে পর্তুগালের ভিসা না লাগিয়ে তাদেরকে ২৮ জুন বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন। 

এ ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের এলাইচ মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া, আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে অন্তর মিয়া, আওয়াল মিয়ার ছেলে মোবারক মিয়া ও কিবরু মিয়ার ছেলে অন্তর মিয়াকে সার্বিয়া নেয়ার কথা বলে অভিযুক্তরা তাদের কাছ থেকে আরো ৩৮ লাখ টাকা নেন। ভুক্তভোগী সবার কাছ থেকে প্রতারকচক্র কানাডা ও সার্বিয়া নেয়ার কথা বলে পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ মোট ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। দেশে এসে ভুক্তভোগীরা ঢাকার শাহজাদপুর ও গুলশানে তাদের অফিসে গেলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আমরা স্বজনরা ও ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়। পরিশেষে কোন উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আমার ভাগিনা মামুনুর রহমান বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও আদিবাসী আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং সি,আর-৩৫৪০/২৪ খ্রি :। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের স্বজন বুলবুল আহমেদ বলেন, আমরা প্রতারকদেন খোঁজে কক্সবাজারের তাদের বাড়িতে গেলে সেখানে আমাদেরকে অপদস্থ করা হয়। আমরা কোন রকম প্রাণ বাচিয়ে ফিরে আসি। 

এ সময় ভুক্তভোগী রুস্তম মিয়া বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমাকেসহ অন্যদেরকে ইন্ডিয়া নিয়ে ৩ মাস রাখে। পরে এটি পর্তুগালের ফেইক ভিসা ধরিয়ে দেয়। আমাদেরকে দেশে ফি আসতে হয়েছে। আমি বর্তমানে সর্বহারা হয়ে আছি। আমার পরিবার নিয়ে মানবেতর জিবন যাপন করছি। ভুক্তভোগী ইব্রাহীম মিয়া বলেন, আমিসহ আরো দুইজনে মিলে ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে। সবাই এখন পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।

এসময় ভুক্তভোগী উসমান মিয়া বলেন, আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দালালকে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু আমাকে এখন পর্যন্ত কোন কিছুই করেনি। দালাল চক্রদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। 

এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগীরা বলেন, বাংলাদেশ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন জানায়। যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতারকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া জমাকৃত আমাদের পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

অভিযুক্ত আাজিজুল হকের স্ত্রী সাফরিন হক মুঠোফোনে বলেন, আমার স্বামী ট্রাভেসল্স এজেন্সি চালায়। বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা নিয়ে থাকতে পারে। মামলার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। ভুক্তভোগীদের বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি।  

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরিদ আহমেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর কানাডার ভিসাগুলো যাচাই-বাছাই করতে দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবো। 

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা ছাড়াও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন ৷

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS