স্টাফ রিপোর্টারঃ দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের একটি ক্লিনিকে জমজ সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী। এর মধ্যে নবজাতকের পা রয়েছে মাত্র একটি। আর ওই পায়ের ৭টি আঙুল। শিশুটির মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ নেই।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে পৌর শহরের মডার্ন হেলথ কেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশুর জন্ম হয়।
প্রসূতি তাসলিমা বেগমের বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শালখুরিয়া গ্রামে। তাসলিমার স্বামী মাহফুজুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। দুটি নবজাতক ছাড়াও এর আগে দুটি সন্তান রয়েছে এ দম্পতির।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্রপাল বলেন, ওইদিন বেলা পৌনে ৩টার দিকে তাসলিমা বেগমকে তার পরিবারের লোকজন ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসক ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (মা ও শিশুস্বাস্থ্য) ডা. তাহেরা খাতুন ওই নারীর অস্ত্রোপচার করেন। এতে প্রথমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। যার ওজন ১ কেজি ৯০০ গ্রাম। পরে দ্বিতীয় যে সন্তানের জন্ম হয় তার মাত্র একটি পা। ওই পায়ের আঙুল আবার ৭টি। অন্যদিকে শিশুটির মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ নেই। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দুটি সন্তানই সুস্থ রয়েছে।
অন্যদিকে ডা. তাহেরা খাতুন বলেন, সাধারণত জেনেটিক্যাল (জিনগত) সমস্যার কারণে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভকালে শরীরে ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি বা রুবেলা ভাইরাসের প্রভাবেও এটি হতে পারে। এ ছাড়া ভাইরাল ইনফেকশনের কারণেও এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ শিশুর জন্ম হতে পারে।
তিনি বলেন, এ ধরনের শিশু সাধারণত বাঁচে না। শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য শিশুর মা-বাবাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির বাবা মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘হামি গরিব মানুষ, ভ্যান চালাই। এখন এই ছলটাক (শিশু) নিয়ে কী করুম, সেটাই তো বুঝা পারছো না। দেশের দানশীল মানুষেরা যদি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা করলে, হয়তো হতে পারে হামার ছলটার ভালো চিকিৎসা করে বাঁচানো হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত নাসনিম আওন বলেন, বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক শাকিল আহম্মেদের নির্দেশে ওই শিশুর উন্নত চিকিৎসার জন্য তার ভ্যানচালক বাবাকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply