বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণকেই বাতের ব্যথায় ভুগতে দেখা যায়। এই বাতের ব্যথায় শরীরের বিভিন্ন অংশে, হাড়ে কিংবা মাংসপেশিতে যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। এ যন্ত্রণা অনেক সময় শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল করে দিতে পারে। তাই বাতের ব্যথা থেকে দূরে থাকতে বিশেষ কিছু নিয়ম জীবনে মেনে চলতে পারেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রে বাতের ব্যথাকে বলা হয় আর্থ্রাইটিস। মূলত এ রোগ অস্থিসন্ধির একটি গুরুতর সমস্যা। অনেকেই মনে করেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের একটি ভ্রান্ত ধারণা। কারণ, এ রোগ যেকোনো বয়সেই শরীরে হানা দিতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর অস্থিসন্ধিতে তীব্র যন্ত্রণা হয়, মাংসপেশিতে দেখা দেয় ফুলে ওঠা ও জড়তার মতো সমস্যাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্থ্রাইটিস রোগটি শুধু শরীরে বিভিন্ন অঙ্গের যন্ত্রণার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়; বরং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কারণে হাড়ে ব্যথার পাশাপাশি হতে পারে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতাও। এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও অনেকটা কমতে শুরু করে।
চিকিৎসকরা বলছেন, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যায় প্রাথমিক পর্যায়ে হাড়ে প্রদাহ ও ব্যথা বাড়ে। যন্ত্রণা দেখা দেয় হাত, কবজি ও পায়ের অংশে। তবে রোগের প্রকোপে এটি চোখ, ত্বক, ফুসফুস, হৃদ্যন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র, কিডনি এমনকি রক্তনালিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তাই আপনার বাতের ব্যথা অন্যান্য জটিল রোগ কিংবা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষতি সাধন করবে কি না, তা বোঝার জন্য অবশ্যই বাতের ব্যথার বিপজ্জনক উপসর্গগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।
এ রোগের বিপজ্জনক উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথার সঙ্গে ক্ষুধামন্দা, জ্বর, অনিদ্রা, ক্লান্তিবোধ, হাত-পা অবশ অনুভূত হওয়া, হাত-পায়ের জোর কমে যাওয়া, চোখ সামান্য লাল হয়ে যাওয়া এবং হাত-পায়ে টান অনুভব করা।
শরীরে এসব উপসর্গ দেখে দিলেই সতর্ক হতে শুরু করুন। মনে রাখবেন, বাতের ব্যথার এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন এনেই এ সমস্যা সহজে সমাধান করা যায়। এগুলো হলো-
১। বাতের ব্যথা থেকে দূরে থাকতে বয়স অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
২। পাশাপাশি নিতে হবে পায়ের বিশেষ যত্ন। গবেষকরা বলছেন, সঠিক জুতা ব্যবহারে পা ও হাড়ে ব্যালেন্স থাকে। যা আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী।
৩। খাবারের তালিকা থেকে দ্রুত বাদ দিতে হবে ময়দা, ইস্ট, গ্লাটেন, হাইড্রোজেনেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট, দুগ্ধজাত খাবার, ক্যাফেন, অ্যালকোহল, তামাক ইত্যাদি।
৪। বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে ফাইবার যুক্ত খাবার, সবজি, ফল, ভিটামিন সি-ডি এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ইত্যাদি খাওয়ায় প্রাধান্য দিতে হবে।
৫। টিস্যু ও হাড়ের যত্নে নিয়মিত রসুন ও কালোজিরার কুসুম গরম তেলে পুরো শরীর ম্যাসাজ করতে হবে।
৬। মানসিক চাপ কমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। তাহলেই বাতের ব্যথা থেকে দূরে রাখা সম্ভব।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply