মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করবে ইলেকট্রনিক্স শিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩
  • ২০৭ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশেকে উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে গার্মেন্টেসের পর সম্ভাবনাময় ইলেকট্রনিক্স শিল্পের টেকসই বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য এই শিল্পখাতে সরকারি পর্যাপ্ত নীতি সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করবে ইলেকট্রনিক্স শিল্প। তাই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে দেশের ইলেক্ট্রনিক্স শিল্পের বিকাশের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি ‘সেন্ট্রাল ফোরাম’ গঠনের আহবান জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবার আগে নাগরিকদের চিন্তা, চেতনা ও আচরণে স্মার্ট হতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয় ।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কুড়িলে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার হল-১ এ চলমান তিনদিন ব্যাপী এটিএস শিল্পমেলার প্রদর্শনী স্থলের দ্বিতীয় তলায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশীয় শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় এই আহবান জানানো হয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মোর্শেদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বুয়েটের অধ্যাপক ড. অলোক কুমার মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুর রহিম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও ইফাদ গ্রæপের ভাইস-চেয়ারম্যান তাসকিন আহমেদ।

সভায় ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও গোলাম মোর্শেদ বলেন, পোশাক শিল্পের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সম্ভাবনাময় খাত ইলেকট্রনিক্স শিল্প। মেড ইন বাংলাদেশ নিয়ে পোশাক শিল্প দেশকে ব্র্যান্ডিং করতে না পারলেও আমরা ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীতে এক নামে পরিচিত করাতে পারবো। সম্মিলত প্রচেষ্টায় বিশ্বে আমরা নেতৃত্বও দিতে পারবো।

ইপিবি’র ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, নতুন সম্ভাবনাময় শিল্পগুলোকে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে। দেশের রপ্তানি বহুমূখীকরনে বেশকিছু স্ট্র্যাটেজি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক মেলায় দেশীয় পণ্যের অংশগ্রহণে সহায়তা করছে ইপিবি। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প বিকাশের স্বার্থে ট্রেড মিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিল্পোদ্যাক্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দেশে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় কৌশলগত নীতি সহায়তা দিচ্ছে ইপিবি।

আলোচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুর রহিম খান বলেন, দেশীয় শিল্পোন্নয়ন সহায়ক নীতি, সরকারি ও বেসরকারি খাত সমানভাবে কাজ করে যাওয়ায় বাংলাদেশের উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে। শিল্পনীতিতে আমদানি বিকল্প দেশীয় শিল্পের বিকাশ উৎসাহিত করা হচ্ছে। সেজন্য দেশীয় শিল্পের যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ও নীতি সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলেই দেশে ইলেকট্রনিক্স ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশ ঘটছে এবং বাজার তৈরি হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। উন্নত দেশে পৌঁছাতে শুধু গার্মেন্টস শিল্পের উপর নির্ভরশীল হলে চলবে না; ইলেকট্রনিক্স ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করলেও আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এগিয়ে থাকতে সরকার জাতীয়ভাবে দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

আলোচনায় ইফাদ গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান তাসকিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে গার্মেন্টস এর চেয়েও বড় সম্ভাবনাময় শিল্পখাত হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস শিল্প। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্প তার বিশাল সম্ভাবনার স্বাক্ষর রেখেছে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কয়েকটি ব্র্যান্ডের মাধ্যমে আমরা কোরিয়া ও জাপানকে চিনেছি। বর্তমানে ওয়ালটনকে দিয়ে প্রযুক্তি খাতে বিশ্ব বাংলাদেশকে চিনবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিতে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। একাডেমি ও ইন্ডাস্ট্রিকে একত্রে কাজ করতে হবে। তিনি ব্যাপক কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং এর উপরও জোর দেন।

তিনি আরো বলেন, ওয়ালটনের যে বিশাল প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে পারলে দেশের রিজার্ভের উপর চাপ আরো কমে আসবে। তাই দেশের ইলেকট্রনিক্স ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশে সরকারি নীতি সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তিনি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ওয়ালটনের মতো ইনোভেশন খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগের পরামর্শ দেন।

বুয়েটের অধ্যাপক ড. অলোক কুমার মজুমদার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবার আগে নাগরিকদের চিন্তা, চেতনা ও আচরণে স্মার্ট হতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে স্মার্ট করে তুলতে হবে। সেজন্য তিনি দেশের শিল্পখাত, সাধারণ নাগরিক ও শিক্ষা ব্যবস্থায় আইওটি ও ন্যানো টেকনোলজি ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS