সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
নাম বাদ পড়ায় ঋণখেলাপি বিতর্ক শেষ, নির্বাচনে মান্নার পথ পরিষ্কার প্রবাসী ভোটারদের জন্য ৩ লাখ ৭৬ হাজার ব্যালট প্রেরণ আজই শেষ হচ্ছে মনোনয়নপত্র জমা মনোনয়ন ফরম সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় জানাল নির্বাচন কমিশন বিদেশে থাকা ভোটারদের নিবন্ধন পৌঁছাল ৯ লাখ ২৪ হাজারে ইসলামী ব্যাংকের শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত রেমিট্যান্স বাড়ায় তিন ব্যাংক থেকে ১১ কোটি ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র সংস্কার ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনে স্থানীয় সরকার বিভাগকে ইসির চিঠি প্রথম ২৭ দিনেই রেমিট্যান্সে সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা

পাকিস্তান ঋণ পাচ্ছে ৩০০ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৩
  • ১৯০ Time View

বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। এমনকি সংকটের জেরে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতেও পড়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল বিপুল অংকের ঋণ সহায়তা।

অবশেষে দেশটিকে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরি (বেইলআউট) ঋণ প্রদানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে একসঙ্গে নয়, ধাপে ধাপে এই অর্থ পাবে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থিক সংকট-কবলিত পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ৩ বিলিয়ন (৩০০ কোটি) মার্কিন ডলারের বেলআউটের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বোর্ড। এতে করে দেশটি এখন প্রায় ১২০ কোটি ডলার হাতে পাবে। বাকিটা আগামী নয় মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে দেওয়া হবে পাকিস্তানকে।

বিবিসি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটি ঋণ খেলাপি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং অর্থনৈতিক সংকট এতোটাই প্রকট আকার নিয়েছিল যে, এক মাসের আমদানির জন্যও পাকিস্তানের হাতে প্রয়োজনীয় বিদেশি মুদ্রা পর্যাপ্ত পরিমাণ ছিল না।

তবে চলতি সপ্তাহে দীর্ঘদিনের মিত্র সৌদি আরব থেকে ২০০ কোটি ডলার পেয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায় এই বেলআউট প্যাকেজটি একটি বড় পদক্ষেপ।

তিনি বলেছেন, ‘এই প্যাকেজ অতিজরুরি থেকে মধ্যমেয়াদী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। একইসঙ্গে এটি পরবর্তী সরকারকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতেও পথ নির্ধারণের জন্য আর্থিক সুরক্ষা দেবে।’

মূলত পাকিস্তানের সংকটাপন্ন অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী গুরুতর সমস্যাগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে আট মাসের কঠিন আলোচনার পর দেশটির সঙ্গে আইএমএফের এই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছিল। আর এর মধ্যে ঋণদাতাদের ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল পাকিস্তান।

এছাড়া পাকিস্তানের বেশিরভাগ অংশ গত বছর বিধ্বংসী বন্যার কবলে পড়েছিল। এতে অর্থনৈতিক সংকট আরও বৃদ্ধি পায় এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাসহ দেশের অন্যান্য প্রধান সমস্যাও এর সঙ্গে যুক্ত হয়। আর এর জেরেই সংকট প্রকট আকার ধারণ করে পাকিস্তানে।

বিবিসি বলছে, এর আগে সৌদি আরব গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার জমা করে বলে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার জানান। মধ্যপ্রাচ্যের তেল-সমৃদ্ধ এই দেশটি চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই অর্থের প্রতিশ্রুতি দিলেও আইএমএফের বেলআউট চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তা হস্তান্তর বন্ধ করে দিয়েছিল।

সৌদি আরবের দেওয়া এই অর্থ এবং আইএমএফের সঙ্গে হওয়া চুক্তি পাকিস্তানের বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে সহায়তার জন্য আরও তহবিলের পথ উন্মুক্ত করবে। আর এই মাসের শেষ নাগাদ পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে জানিয়েছেন ইসহাক দার।

উল্লেখ্য, বছরের পর বছর ধরে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছিল পাকিস্তানের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমলে ২০১৯ সালে আইএমএফের সঙ্গে ৬৫০ কোটি ডলারের দীর্ঘমেয়াদী ঋণের চুক্তি করেছিল পাকিস্তান। সেই অনুযায়ী ঋণের কয়েকটি কিস্তিও এসেছিল দেশটিতে।

চুক্তিতে পাকিস্তানকে জ্বালানি পণ্যের ওপর ভর্তুকি প্রত্যাহারের শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। কিন্তু ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার সেই শর্ত মানতে রাজি না হওয়ায় ঋণের কিস্তি স্থগিত করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

তবে ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের সরকার বিদায় নেওয়ার পর পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরিফ। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি আইএমএফের সেই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ফের চেষ্টা শুরু করেন; কিন্তু এবার আইএমএফ সেই চুক্তিতে ফিরে আসার ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থান নেয়।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আইএমএফের এই ঋণ ঝুলে থাকায় অন্যান্য বিদেশি সংস্থা থেকেও ঋণ বা সহায়তা আসা কমে যায়। এর মধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের মজুত কমতে থাকায় দিন দিন অর্থনৈতিক সংক প্রকট হওয়া শুরু করে পাকিস্তানে।

তবে সংকট ও অনিশ্চয়তা পাশ কাটিয়ে আইএমএফের ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরি (বেইলআউট) ঋণের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় পাকিস্তান এখন কিছুটা নিশ্চিন্ত হতেই পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS